জুয়া ও ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য প্রচলিত আইনে সাজার বিধান বাড়ানো উচিত বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দেশের ১৩টি অভিজাত ক্লাবে জুয়া খেলা বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া রিটের রায়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন। এছাড়াও দেশের অভিজাত ১৩টি ক্লাবসহ সারাদেশে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই ১৩টি ক্লাবের মধ্যে রয়েছে— ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব গুলশান, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়র্স ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব। এসময় ঢাকা ক্লাবের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
প্রসঙ্গত, প্রকাশ্যে জুয়া খেলা নিয়ে ১৮৬৭ সালের একটি আইন দেশে এখনও বিদ্যমান রয়েছে। এই আইনে জুয়া খেলার অপরাধে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এর আগে ঢাকা ক্লাবসহ দেশের ১৩টি অভিজাত ক্লাবে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সামিউল হক ও অ্যাডভোকেট রোকন উদ্দিন মো. ফারুক জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেছিলেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকা ক্লাবসহ দেশের ১৩টি ক্লাবে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি জুয়াসহ অবৈধ ইনডোর গেম যেমন— কার্ড, ডাইস ও হাউজি খেলা অথবা এমন কোনও খেলা যাতে টাকা বা অন্য কোনও বিনিময় হয়ে থাকে, তা বন্ধের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
রিট আবেদনে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এবং পাবলিক গেম্বলিং অ্যাক্ট ১৮৬৭ অনুযায়ী কোনও প্রকার জুয়া খেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। একইসঙ্গে সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সরকারকে পতিতাবৃত্তি ও জুয়া খেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে। তাই এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি।