X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মালেকের মামলা তদন্ত করতে চায় র‌্যাব

নুরুজ্জামান লাবু
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৪৪আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৪৯

স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভার

শত কোটি টাকার মালিক স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুই মামলার তদন্ত করতে চায় র‌্যাব। এজন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া মালেকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা দায়ের করার জন্যও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে র‌্যাব। এদিকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মালেকের সম্পদের বিবরণ হাতে পেয়ে বিস্মিত হয়েছেন খোদ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও। তারা বলছেন, একজন গাড়িচালক হয়ে এত সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়টি রীতিমতো বিস্মিত করেছে তাদের। মালেক যাদের সহযোগিতায় এত সম্পদ গড়েছেন তাদের বিষয়েও খোঁজ-খবর করা হচ্ছে।
র‌্যাবের পরিচালক (মিডিয়া) লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘মামলার তদন্তের অনুমতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে ড্রাইভার মালেকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা দুটি তদন্ত করবে র‌্যাব।’
অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি, জাল টাকার ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গত রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আব্দুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতারের পর তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারী হয়ে শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হওয়ায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর মালেককে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও জাল টাকা রাখার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তুরাগ থানা পুলিশ তদন্ত করছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে মালেকের সম্পদের একটি খসড়া হিসাব তৈরি করে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়েরের জন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য দুদক সূত্র জানিয়েছে, গত বছরেই একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে খোঁজ-খবর শুরু করে দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২২ অক্টোবর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আব্দুল মালেককে তলব করেছিল তলব। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে বিষয়টি আলোচনায় আসার পর মালেকের সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ড্রাইভার আব্দুল মালেক ১৯৮২ সালে সাভার স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে তিনি যোগ দেন স্বাস্থ্য অধিদফতরে। তবে তার উত্থান হয়েছে গত এক যুগে। ২০১০ সালে মালেক তৎকালীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের যোগসাজেশে শতাধিক ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকেই মূলত নিয়মিত তদবির, বদলী ও কেনাকাটার টেন্ডার সিন্ডিকেটের হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় ২টি সাততলা বিলাসবহুল ভবন, ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন, দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে মালেক নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত রেখেছে। কিন্তু রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে সে সকল সম্পত্তির বিষয়ে মুখ খুলছে না। ব্যাংকগুলোতে তার কত টাকা গচ্ছিত রয়েছে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে জানতে হবে। মালেকের পুরো সম্পদের চিত্র তুলে আনতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মালেকের এসব সম্পদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিফতরের কারো সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে কি না এসব তথ্যও যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ড্রাইভার মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরও অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নাম বলেছে, যারা অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাদের বিষয়েও গোয়েন্দা অনুসন্ধান শুরু করেছে একাধিক সংস্থা। অবৈধ সম্পদের বিষয়ে তদন্ত একমাত্র দুদক ও সিআইডি করতে পারে। এজন্য গোয়েন্দারা সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন তৈরি করে তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে পাঠাবে।
 
/এফএএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক