X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

হাজী সেলিমের ছেলের টর্চার সেলে মিললো হাড়, দড়ি ও হ্যান্ডকাফ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ অক্টোবর ২০২০, ২১:০৭আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৪০

হাজী সেলিমের ছেলের টর্চার সেলে মিললো হাড়, দড়ি ও হ্যান্ডকাফ

পুরান ঢাকার চকবাজারে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা আশিক টাওয়ার ভবনের ছাদের একটি রুম থেকে মানুষের হাড় পাওয়া গেছে। র‌্যাব দাবি করেছে, ১৬ তলা ভবনের ছাদের ওপরের এই কক্ষটি হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো। ইরফান সেলিমকে তার সহযোগীসহ সোমবার (২৬ অক্টোবর) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।
র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. ক. আশিক বিল্লাহ বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল ওই কক্ষটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এরপর আমরা অভিযান চালিয়েছি। তিনি আরও বলন, টর্চার সেল থেকে হ্যান্ডকাফ, দড়ি, চাকুসহ আরও বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মানুষের হাড়ের বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনও মন্তব্য করেননি কেউ। ফরেনসিক করার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা।

হাজী সেলিমের ছেলের টর্চার সেলে মিললো হাড়, দড়ি ও হ্যান্ডকাফ

আশিক টাওয়ারটি ১৬ তলা ভবন। পুরান ঢাকার সবচেয়ে বড় ভবন এটি। ভবনের ১৬ তলায় হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা ডেভেলপারের অফিস। এর ওপরেই ছাদে টর্চার সেল।
ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আব্দুল খালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মদিনা ডেভেলপারে হাজী সেলিম নিজেও অফিস করেন। তার ছেলে ইরফান সেলিমও মাঝে মাঝে আসেন। তারা ছাদেও যান। তবে টর্চার সেলের বিষয়ে কোনও কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।
সুউচ্চ আশিক টাওয়ারে মদিনা ডেভেলপারের অফিসে কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সোমবার রাতেও দেখা গেছে। তারা জানিয়েছেন, হাজী সেলিম ও ইরফান সেলিম দুজনই এই অফিসে আসেন। তবে তারা টর্চার সেলের বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি।

এর আগে সন্ধ্যায় র‌্যাবের মুখপাত্র লে. ক. আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বাড়ির পাশে চকবাজারে আরও একটি টর্চার সেলের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। এ সময় তিনি বলেন, হাজী সেলিমের ছেলে কাউন্সিলর ইরফান সেলিম এবং তার সহযোগী জাহিদুল ইসলামকে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাদক ও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার অপরাধে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুজনকে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। হাজী সেলিমের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র ও মাদকের ঘটনায় র‌্যাব বাদী হয়ে দুটি মামলা করবে বলে জানিয়েছেন আশিক বিল্লাহ।

 

হাজী সেলিমের ছেলের টর্চার সেলে মিললো হাড়, দড়ি ও হ্যান্ডকাফ

সোমবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১টা থেকে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের চকবাজারের ২৬ দেবীদাস লেনের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ইতোমধ্যে হাজী সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে র‌্যাবের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুই জনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২৬ অক্টোবর) হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে সোমবার ভোরে মামলাটি করেছেন। মামলায় তিন জন নামীয় এবং অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলো, ইরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, হাজী সেলিমের মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন। গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে ঘটনার পরই গ্রেফতার করা হয় বলেও জানান তিনি।
রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে কলাবাগানের ট্রাফিক সিগন্যালে হাজী সেলিমের একটি গাড়ি থেকে দুই-তিন জন ব্যক্তি নেমে ওয়াসিম আহমেদ খানকে ফুটপাতে ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে ট্রাফিক পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন। পথচারীরা এই দৃশ্য ভিডিও করেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ধানমন্ডি থানা পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িটি থানায় নিয়ে যায়।
ওয়াসিফ আহমদ এজাহারে অভিযোগ করেন, রবিবার (২৫ অক্টোবর) নীলক্ষেত থেকে বই কিনে মোটরসাইকেলে করে তিনি মোহাম্মদপুরে তার বাসায় ফিরছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে তার মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি গাড়ি। ওয়াসিফ আহমদ মোটরসাইকেল থামিয়ে গাড়িটির গ্লাসে নক করে নিজের পরিচয় দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চান। তখন এক ব্যক্তি বের হয়ে তাকে গালিগালাজ করে। তারা গাড়ি নিয়ে কলাবাগানের দিকে যায়। মোটরসাইকেল নিয়ে ওয়াসিফ আহমদও তাদের পেছনে পেছনে যান। কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে গাড়িটি থামলে ওয়াসিফ তার মোটরসাইকেল নিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান। তখন তিন-চার জন গাড়ি থেকে নেমে বলতে থাকে, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বাইর করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বাইর করতেছি। তোকে আজ মেরেই ফেলবো’−এই কথা বলে তাকে কিলঘুষি দিতে থাকে। পরে ট্রাফিক পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে এবং হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

/এআরআর/এমআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ২০
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ২০
মুক্তির পর থেকেই মামুনুল হককে ঘিরে অনুসারীদের ভিড়
মুক্তির পর থেকেই মামুনুল হককে ঘিরে অনুসারীদের ভিড়
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ