X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতিতে থাকুক না থাকুক, ফানুসের বাজার উড়ছে

সাদ্দিফ অভি
৩১ ডিসেম্বর ২০২০, ২২:৩২আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৪১

ফানুস উৎসব

উৎসবে নতুনত্বকে স্বাগত জানাতে বাঙালি কার্পণ্য করে না। তাতে যোগ হয়েছে ফানুস। মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পূজার অংশ হলেও এখন নতুন বছরকে স্বাগত জানাতেও ওড়ানো হয় ফানুস। উৎসবের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাই বেড়েছে ফানুসের চাহিদা। বিক্রেতারা বলছেন, অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে গত ৭-৮ বছরে ফানুসের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে।

বাংলা নববর্ষ, ইংরেজি বর্ষবরণ, সাকরাইন উৎসব ছাড়াও বিভিন্ন দিবসে ওড়ানো হয় ফানুস। তবে বর্ষবরণ এবং সাকরাইনে ফানুসের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। আজকাল বিয়েতেও বাদ যায় না এটি।

পুরান ঢাকার ফানুস বিক্রেতারা বলছেন এখন ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা দামের ফানুসও পাওয়া যায়। আকার, ধরন আর মানের ওপর নির্ভর করে দাম। চাহিদা মেটাতে দেশি ফানুসের পাশপাশি চীন থেকেও আমদানি হয়। মোটামুটি চীনা ফানুসের দখলেই আছে এই বাজার।

শাখারিবাজারের ফানুস বিক্রেতা বিশ্বজিত জানান, আগে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ফানুস বিক্রি হতো। এখন সারাবছরই বিক্রি হয়। বিশেষ করে থার্টিফার্স্ট আর সাকরাইনে বেশি বিক্রি হয়। এই সময় বিক্রি করে কুলানো যায় না। আগে থেকে স্টক করে রাখতে হয়। দিনে প্রায় হাজারেরও বেশি বিক্রি হয় বছরের শেষ তিন দিনে।

চকবাজারের ফানুস বিক্রেতা ইসমাইল বলেন, সাকরাইনে যেমন ঘুড়ি বিক্রি হয়, তেমনি থার্টিফার্স্ট এলে ফানুস। আগে হাতেগোনা কয়েকজন বিক্রি করতো। এখন অনেকেই আনে।  

ফানুসের প্রচলন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের হাত ধরে। বৌদ্ধ পরিভাষায় এর নাম ‘আকাশ প্রদীপ’। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কাঠামো তৈরি করে তার ওপর রঙিন কাগজ জুড়ে বিভিন্ন আকৃতির ফানুস তৈরি হয়।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের পূজার অংশ হিসেবে ফানুস ওড়ায়। রীতি অনুযায়ী আষাঢ়ের পূর্ণিমায় ফানুস ওড়ানোর কথা থাকলেও আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় সে সুযোগ থাকে না। তাই দীর্ঘ তিন মাস বর্ষাব্রত পালন করার পর প্রবারণা পূর্ণিমা বা আশ্বিনী পূর্ণিমায় ফানুস ওড়ানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফাজরীন হুদা মনে করেন, চীনা সংস্কৃতিতে ফানুসের প্রচলন বেশি। চীন থেকে এই সংস্কৃতি ব্রিটিশ শাসনামলে এই উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফানুস কখনই বাঙালি উৎসবে ছিল না। আগেকার দিনে রাজারা অনেক ধরনের আনন্দ-উৎসবের আয়োজন করতেন। এর মধ্যে ভোজ ও রঙের খেলা ছিল। আমাদের সংস্কৃতিতে ছিল ঘুড়ি। আর এখানে মূলত রং খেলা, মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন; এসবই ছিল বেশি। প্রাচীন বাংলা কিংবা মোগল আমলে ফানুসের ব্যবহার দেখিনি। চীনা সংস্কৃতি থেকেই হয়তো বাঙালি ফানুসকে নিয়েছে। চীনা সংস্কৃতিতে গ্রামে গ্রামে ল্যান্টার্ন তথা লণ্ঠন উৎসব হয়। আর এক সংস্কৃতি সবসময়ই অন্য সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমাদেরও প্রবণতা আছে অন্য সংস্কৃতি অনুকরণ করার।’

/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
মিয়ানমারের ৩৮ শরণার্থীকে ফেরত পাঠালো ভারত
মিয়ানমারের ৩৮ শরণার্থীকে ফেরত পাঠালো ভারত
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস