২০১০ সালের বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও ২০১৪ সালের ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা’ সংশোধনের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা বন্ধের সুপারিশও করা হয়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণায় উৎকর্ষ সাধনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে ইউজিসির ২০২০ সালের প্রকাশ করা প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে ইউজিসি থেকে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
ইউজিসির সুপারিশে বলা হয়, ‘অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাসে ব্যাচেলর, মাস্টার্স, এমফিল— এমনকি পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির খবর প্রায়শই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাময়িক অনুমতিপত্র বা সনদপত্র ছাড়া বাংলাদেশে কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বা পরিচালনা সম্পূর্ণ অবৈধ। গুণগত উচ্চশিক্ষার প্রসারে সীমিত পরিসরে স্বনামধন্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অবকাঠামোগত ও অন্যান্য সুবিধাসহ শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন ও পরিচালনার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
তবে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি নিয়মিত তদারকির জন্য বিদ্যমান বিধিমালা ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা, ২০১৪'-এর সংশোধন করা প্রয়োজন। কেননা, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন বিদ্যমান বিধিমালা, ২০১৪ ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০' এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি দেশের বেসরকারি পর্যায়ে ক্রমবিকাশমান উচ্চশিক্ষা খাতে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
এছাড়া সুপারিশে বলা হয়, দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোচনাক্রমে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে। এতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সমস্যা ও চাহিদার কথা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে জানাতে পারবে। চাহিদার নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গবেষণার মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাজ করার পাশাপাশি উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাবে এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠান উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে পণ্যের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ বৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য আনয়ন করতে সক্ষম হবে। এ ধরনের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে রাষ্ট্রের রাজস্ব বাজেটের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।