ঘুষ লেনদেনের দুর্নীতি মামলায় পুলিশের বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান মিজানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং আইনে মিজান ও তার স্ত্রীসহ চার জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
দুর্নীতি মামলায় মিজানের কারাদণ্ডের বিষয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ডিআইজি মিজানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছালে তারা কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কারাবিধি অনুযায়ী, যদি তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে তিনি এই মামলা থেকে মুক্তি পাবেন। তবে তার বিরুদ্ধে দুদকের আরেকটি মামলা থাকায় ওই মামলায় তার জামিন হয়নি, বিধায় আপাতত তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।
মিজানের চাকরিচ্যুতির বিষয়ে দুদুকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতারের পর দুদক থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। তবে যেহেতু এখন তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি, সে ক্ষেত্রে দুদকের সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী, তিনি স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত হবেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত আপিলে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত তিনি স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত থাকবেন।
জানা যায়,গত ২০১৯ সালের ১ জুলাই ডিআইজি মিজান হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। এরপর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে শাহবাগ থানাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন।এরপর শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ২ জুলাই ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়াও অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের করা মামলায় ডিআইজি মিজান ও তার স্ত্রীসহ চার জনের নামে ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলায় ডিআইজি মিজানের জামিন হয়নি।
এই মামলায় অপর আসামিরা হলেন— মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আদালত দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় পুলিশের সাবেক ডিআইজি মিজানুর রহমান মিজানকে তিন বছরের এবং দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের পৃথক দুই ধারায় ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এদিকে এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধি আইনের ১৬১ ধারায় ৩ বছর ও মানি লন্ডারিং আইনে ধারায় ৫ বছর মোট ৮ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুইটি ধারায় শাস্তি একসঙ্গে চলবে বলে আদালত রায়ের আদেশে উল্লেখ করেন। ফলে বাছিরকে ৫ বছর সাজা ভোগ করতে হবে।