বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রদান ইউনিট চালু এবং কর্মকর্তা নিয়োগের দাবিতে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয।
সোমবার (১৬ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়, তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের নিমিত্তে বিধান করার লক্ষ্যে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ২০ নং আইন) প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকদের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জনগণ প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা হলে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি পাবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
এই আইনের ধারা-৩ এর মতে, অন্যান্য প্রচলিত আইনের বিধানাবলির ওপর এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাবে। আইনটির ধারা-৪ এর মতে, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার থাকবে এবং কোনও নাগরিকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। আইনের ধারা ২(খ)(অ)-তে প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুসারে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এই আইনের আওতাধীন একটি কর্তৃপক্ষ। আইনের ধারা -১০ অনুযায়ী, তথ্য সরবরাহের নিমিত্ত প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ তথ্য প্রদান ইউনিটের জন্য একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। আইনের বিধানের প্রতিপালনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আইন প্রণয়নের এক যুগেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে এমন কোনও কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এমতাবস্থায় নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর বিধান প্রতিপালনের নিমিত্তে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রদান ইউনিট চালু এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা অত্যাবশ্যক বলে নোটিশে দাবি করা হয়।
নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রদান ইউনিট চালু এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগের নিমিত্তে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়ে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
