বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কর্তৃক পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নিয়ে মির্জা ফখরুল মিথ্যা বক্তব্য দেওয়ায় দলটির এদেশে রাজনীতি করার আর অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
শনিবার (১১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ল’ইয়ার্স ফর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ‘‘সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় দেশপ্রেমিক নাগরিকদের করণীয়’’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রসঙ্গে বিচারপতি মানিক বলেন, এতবড় মিথ্যা কথা তার মুখ থেকে কিভাবে বের হলো তা নিয়ে কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন নেই। কারণ মিথ্যা কথা সে প্রায়ই বলে। এই কথা পৃথিবীর সকল মিথ্যা কথাকে হার মানিয়েছে। যে দলে এমন একজন সেক্রেটারি জেনারেল এত বড় মিথ্যা বলে— সেই দলের কী এই দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার আছে? সেটি স্বাভাবিক প্রশ্ন।
‘পদ্মা সেতু আমাদের জাতিকে বিশ্বে যে পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে, তা দেখে অনেকেই হিংসাপরায়ণ। দুদিন আগেও তারা বলছিলেন, পদ্মা সেতুতে উঠলে নাকি তা ভেঙে যাবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা অনেক কথাই বলেন, কিন্তু এভাবে কিভাবে বেফাঁস কথা বলেন তারা? এখন ফখরুল সাহেব আবিষ্কার করলেন— খালেদা জিয়া প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তিনি দেখাতে পারবেন? নিশ্চয় এই রাজাকার পুত্র দেখাতে পারবেন না যে, খালেদা জিয়া প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তার এই বক্তব্যের সমর্থনে বিএনপির আর কেউ কিন্তু কথা বলেননি। কারণ তারা জানেন মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনি কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদের বড় মেয়ে খন্দকার মেহনাজ রশিদকে গুলশান ক্লাবে উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এডমিন হিসেবে চাকরি ও পরে অব্যাহতি দেওয়ার প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে জানাজানি হওয়ার পর তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগের ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। মেহনাজ রশিদ গোয়েন্দা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সে বেশকিছু সময় পাকিস্তানে থাকাকালে আইএসআই তাকে গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সুতরাং গোয়েন্দাগিরিতে সে সিদ্ধহস্ত। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, তার বর্তমান স্বামী দেশের একজন প্রতাপশালী মন্ত্রীর খালাতো ভাই। নামটা আপনারা খোঁজ করলে পাবেন। আমার মনে হয়— তাকে সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে সেখান থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করে বাইরে দেওয়ার জন্য। এবং আমি নিশ্চিত গত আট মাসে সে অনেক সংবাদ ও গোপন তথ্য এরই মধ্যে সংগ্রহ করেছে। যেহেতু তাকে একটি ম্যাগাজিনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই ম্যাগাজিনের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। সেই খুনি রশিদের নাকি এখনো বাড়ি আছে। মেহনাজ রশিদ সেই বাড়িতে থাকেন। সেই বাড়িতে সন্ধ্যার পর অনেকের মিলনমেলা ঘটে। গুলশান ক্লাবে আমাদের অনেক ধরণের মানুষ আসেন। তাই সেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য মেহনাজ নিয়োগ নিয়েছে এটা স্পষ্ট। তদন্ত চলছে। আমরা চাইবো, তদন্ত যেন গভীরে যায় এবং তাকে যারা চাকরি দিলো তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে।
যেহেতু সামনে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। এই ষড়যন্ত্র চলবে। আমাদের সাবধান হতে হবে। মেহনাজ রশিদের মতো আরও কত ষড়যন্ত্রকারী আমাদের চারপাশে রয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
পজেটিভ বাংলাদেশ-এর পরিকল্পক মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠানের সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি এবিএম বায়েজীদের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী সাহানারা, বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুক, সুরকার শেখ শাহ আলম প্রমুখ।