সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণা করে ২৪ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করায় স্বামীকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে মামলার আসামি সাদিয়া আফরিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. শাহজাদা ও মো. লুৎফর রহমান।
পরে আইনজীবীরা জানান, পটুয়াখালীর বাউফলের অলোকি চান্দকাঠি এলাকার মো. রফিকুল ইসলাম ২০১৭ সালের ৫ মার্চ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সবুজনগর এলাকার সাদিয়া আফরিনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ১১ দিনের মাথায় সাদিয়া তার স্বামীকে ডিভোর্স দেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, রফিকুল ইসলাম তার সাবেক স্ত্রী সাদিয়ার বাবার কাছে টাকা পাবেন বলে সাদিয়া তাকে ২৪ লাখ টাকার চেক দেন। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল ব্যাংকে জমা দিলে এই চেক প্রত্যাখ্যান হয়। এরপর একই বছরের ১৭ এপ্রিল রফিকুল তার সাবেক স্ত্রীকে আইনি নোটিশ দেন। তারপর একই বছরের ২৪ মে মামলা করেন তিনি। বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে সাদিয়া আফরিনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে নিয়ম অনুসারে ১২ লাখ টাকা জমা দিয়ে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন সাদিয়া। এই আপিলের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।
আইনজীবীরা জানান, বিয়ে টিকেছিল মাত্র ১১ দিন। এই ১১ দিনের কোনও একদিন রফিকুল কৌশলে সাদিয়ার চেক নিয়ে যান। সেখানে টাকার অঙ্ক ও সই নকল করে তিনি প্রতারণা করেন। কেননা, সাদিয়ার হিসাব থেকে কখনোই ২০ হাজার টাকার বেশি আদান-প্রদান হয়নি। তাহলে এত টাকার চেক কীভাবে হবে? আর সে একজন ছাত্রী। এসব বিষয় হাইকোর্টে তুলে ধরা হয়েছিল।
বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট তার রায়ে সাদিয়া আফরিনকে খালাস দিয়েছেন। পাশাপাশি যে ১২ লাখ টাকা জমা দিয়ে আপিল করেছেন সেই টাকা ১০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া প্রতারণা করায় বাদী রফিকুলকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। এই টাকা তিন মাসের মধ্যে সাদিয়াকে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।