জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে ‘সম্পৃক্ত ছিল’ প্রধান অভিযুক্ত স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাতও। সে এই হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চেয়ারম্যান বাবু স্বীকার করেছেন, ঘটনার সময় তার ছেলে রিফাতও সেখানে ছিল। তবে এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে র্যাব। সংস্থাটি বলছে, রিফাতকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মুখপাত্র পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
হামলায় ঠিক কত জন অংশ নিয়েছিল জানতে চাইলে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, ‘মামলার এজহারে ২২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে উদ্ধার করা সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখতে পেয়েছি ১০ থেকে ১২ জনকে। সব আসামিকে গ্রেফতারের পর হয়তো ব্যাপারটি স্পষ্ট হবে। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে।’
ফেসবুক লাইভে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন সাংবাদিক নাদিম। তারপরও তাকে কেন হত্যার শিকার হতে হলো— এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফেসবুকে লাইভ করেছেন, নিরাপত্তা চেয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ভালো বলতে পারবে। তবে তিনি আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ছিল।’
সাংবাদিক নাদিম খুনের প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু (৫০) এবং তার সহযোগী মনিরুজ্জামান মনির (৩৫), জাকিরুল ইসলাম (৩১) ও রেজাউল করিমকে (২৬) গ্রেফতারের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর আগে আজ সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে বাবুসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন বিকালে আরেক হামলাকারী রেজাউল করিমকেও বগুড়া থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় র্যাব।
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে পঞ্চগড়ে আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন চেয়ারম্যান বাবু। ঘটনার পর থেকে তিনি গ্রেফতার এড়াতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকেই র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। বাবুর বিরুদ্ধে জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।’
সাংবাদিক নাদিমের চলন্ত মোটরসাইকেল ধাক্কা দেওয়া রেজাউল করিমকে বগুড়া থেকে শনিবার বিকালে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান কমান্ডার মঈন। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা বাবুসহ জড়িত গ্রেফতার আসামিরা সাংবাদিক নাদিম হত্যায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে।