ভারতের চেন্নাইয়ে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। এতে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ দল।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে আয়োজিত পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং বাংলাদেশ টিমের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (লিডো)।
লিডোর খুদে ক্রিকেটাররাই এবারের পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লিডোর তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গৌরবের। বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন ও সহায়তায় খেলায় প্রতিনিধিত্ব করা পথশিশুদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও ভিসা আবেদন সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুধু প্রতিভা বিকাশের একটি মঞ্চ নয়, বরং বিশ্বব্যাপী অসহায়-সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার রক্ষায় বৈশ্বিক সচেতনতার একটি মাধ্যম। এই আয়োজন বিশ্বব্যাপী পথশিশুদের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
লিডোর নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা আনন্দিত। বাংলাদেশের সব পথশিশুর হয়ে বৈশ্বিক প্রতিনিধিত্ব করার যে অভিযানে আমরা অংশ নিতে চলেছি, তা সত্যিই অবিশ্বাস্যভাবে গর্বের। আমাদের এই আয়োজন বিশ্বব্যাপী পথশিশুদের অধিকার রক্ষায় আওয়াজ তুলবে এবং তা পথশিশুদের পরিচয় এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন আসাদ উল্লাহ আসাদ এবং অধিনায়কের দায়িত্বে রয়েছেন হাসান আলী মুসাফির। এছাড়া টিমের অন্য সদস্যরা হলেন–সহ-অধিনায়ক ইমন ইসলাম, খেলোয়াড় হাসিব, রুবেল, আফরিন খাতুন, সাথী, রাজিয়া, জেসমিন, স্বপ্না ও হামিদা।
কোচ আসাদ উল্লাহ আসাদ বলেন, ‘এই পথশিশুরা তিন-চার বছর ধরে বিশ্বকাপ খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি আমার অ্যাকাডেমি থেকে তাদের প্রস্তুত করছি। যেহেতু তারা তিন-চার বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলেছে, তাই তারা আত্মবিশ্বাসী। আমরা অভিজ্ঞ এবং নতুনদের সমন্বয়ে এই বিশ্বকাপ খেলার জন্য একটি দল তৈরি করেছি।’
দলের অধিনায়ক হাসান আলী মুসাফির বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্র্যাক্টিস করছি। আমাদের দল অনেক শক্ত। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যাতে আমরা জিতে আসতে পারি।’
এবারের আসরে বাংলাদেশ দলের স্পন্সর হিসেবে কাজ করেছে ফ্রেন্ডস অব স্ট্রিট চিল্ড্রেন বাংলাদেশ, কেএফসি ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজি ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেড, ইনার হুইল ক্লাব ঢাকা নর্থ ওয়েস্ট, লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ, আইডিপি এডুকেশন এবং এএইচজেড অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
আগামী ২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। এতে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের ২৪টি দল অংশ নেবে। ভারত সরকারের সমর্থন এবং শ্রী দায়া ফাউন্ডেশনসহ ভারতের বেশ কয়েকটি সংস্থার সহায়তায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেডের নেতৃত্বে আয়োজিত হচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসর। এ বছর বিশ্বকাপের মূল প্রতিপাদ্য ‘পরিচয়’ এবং ‘প্রবেশাধিকার’ অর্থাৎ মৌলিক পরিষেবাগুলোতে পথশিশুদের প্রাপ্যতা এবং তাদের অংশগ্রহণকে জোরালো করা।