অসদাচরণের অভিযোগে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন তালুকদারকে দুই বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’ -এর মতো গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ শাস্তির কথা বলা জানানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি জামালপুরে পুলিশের ‘ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের’ কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘জামালপুরের ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন তালুকদারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ, প্রথম ও দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য,তদন্ত প্রতিবেদন, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক দলিলাদি এবং অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনায় ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ জন্য সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪ (৩) এর উপ-বিধি (১) (ক) অনুযায়ী, দুই বছরের জন্য ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ'-এর গুরুদণ্ড প্রদান করা হলো।’ প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘অবনমিতকরণ বলবৎ থাকার সময়ে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনাযোগ্য হবে না। তবে দণ্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্তমান বেতন স্কেলে প্রত্যাবর্তন করবেন। তিনি কোনও বকেয়া প্রাপ্য হবেন না। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’’
যে অভিযোগে গুরুদণ্ড
মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন তালুকদার ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ময়মনসিংহে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন ফুলবাড়িয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এর সিআর মামলা নং-৪৪৪/১৬ পিটিশনটির তদারকির দায়িত্ব তাকে প্রদান করা হয়। তখন তিনি ওই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে মামলার বিবাদী মো. ইউনুছ আলীকে ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থিত নিজ বাংলো বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এছাড়া ফুলবাড়িয়া থানার এনায়েতপুর ফুলতলা গ্রামে আনুমানিক ৮ দশমিক ৮৮ একর জমি ক্রয় করে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে স্থানীয় কৃষক জনৈক মজিবর মোস্তফা এবং আরাজুল্লাহ গনের ভোগ দখল করা জমি রেজিস্ট্রি দলিল বা কোনও প্রকার অঙ্গীকারনামা সম্পাদন ছাড়া কাঁটা তারের বেষ্টনীর ভেতরে নিজ দখলে রাখেন। উল্লিখিত আনুমানিক ৮ দশমিক ৮৮ একর জমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে তার নিজ নামে ও স্ত্রীর নামে কেনার আগে কিংবা নিজ নামে হেবা দলিলমূলে গ্রহণের আগে পুলিশ আইন অনুযায়ী অনুমতি নেননি। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের পর কারণ দর্শানো হয়। পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।’