সবধরনের চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছে '৩৫ চাই আন্দোলন’কারীরা। অবরোধের পর আজিমপুর-সায়েন্সল্যাব রাস্তা গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প হিসেবে আজিমপুর থেকে পলাশী হয়ে নিউমার্কেট থানার সামনে দিয়ে কাঁটাবন হয়ে গাড়ি চলাচল করছে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন দিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আমরণ অনশন করছিলেন তারা। পূর্বঘোষিত ছাত্র সমাবেশের অংশ হিসেবে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন তারা।
আন্দোলনকারীদের ঘিরে ইতোমধ্যেই শক্ত অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনকারীরা হাতে বিষের বোতল নিয়ে অবস্থান করছেন। তারা জানিয়েছেন, পুলিশ তাদের ওপর হামলা করলে বা ধরে নিতে চাইলে তারা বিষপান করবেন। অনশনকারীরাও নীলক্ষেত মোড় অবস্থা করছেন ভ্যানে শুয়ে। প্রধানমন্ত্রী বা তার মুখপাত্রের সঙ্গে দেখা করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান। এই প্রতিবেদন লেখার সময় (সন্ধ্যা ৭টা) তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে!
‘চাকরিতে বয়স ৩৫’ প্রত্যাশী আরিফা বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে আমরা সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত করার দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু বার বার আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের ওপর অযৌক্তিক হামলা চালানো হয়েছে, আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর রমনা থানার এডিসি প্রধানমন্ত্রীর বা তার নিকটস্থ কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়সীমা পার হলেও সেই আশ্বাসের কোনও প্রতিফলন নেই। সেই জন্যই পূর্বঘোষিত ছাত্র সমাবেশের অংশ হিসেবে আজকের এই নীলক্ষেত মোড় অবরোধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার আমাদের সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিয়েছে। আমাদের ২৫ বছর বয়সে পড়াশোনা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আমরা কেন ২৯ বছরে শেষ করবো। আমাদের অনার্স-মাস্টার্স শেষ হতে ৯ বছর লেগেছে। এখানে আমাদের দোষ কোথায়? রাষ্ট্র যদি সত্তর বছরের ব্যক্তি চালাতে পারে, তাহলে আমরা কেন ৩০-এর পর আর চাকরিতে জয়েন করতে পারবো না? ৩০-এর পরে যদি মেধা কমে যায়, অকার্যকর হয়ে যায়, তাহলে প্রশাসনের সবাইকে এই বয়সের পর অবসর দিয়ে দেওয়া হোক। সব কিছু উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে করা হচ্ছে, তাহলে চাকরির বয়সসীমা কেন তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ানো হচ্ছে না?’
‘৩৫ চাই আন্দোলন’-এর সদস্য সচিব মো. রাসেল বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কানে তুলছেন না। আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রমনা জোনের এডিসির সঙ্গে আমাদের কথা হয়। তিনি আমাদের প্রতিনিধি দলকে প্রধানমন্ত্রী বা তার মুখপাত্রের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর ৮ অক্টোবর আমরা প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি করে ঘোষণা দিয়েছি আমাদের দাবি না মানলে আমরা আমরণ অনশন করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অনশন কর্মসূচি ছিল গত তিন দিন ধরে। সেখানে আমাদের আহ্বায়ক শুভ ভাই অসুস্থ হয়ে গেছেন, তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন তার অবস্থা খারাপ, কিন্তু তিনি অনশন ভাঙবেন না। আমাদের এখন দাবি প্রধানমন্ত্রী বা তার মুখপাত্রের সঙ্গে দেখা না করিয়ে দিলে আমরা আন্দোলন থামাবো না। এবার আর কোনও আশ্বাস নয়, সরাসরি দেখা করিয়ে দিতে হবে।’