জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য ক্রমান্বয়ে সস্তা হয়ে পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি বলেন, ‘তামাকের কারণে লাখ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু, অসুস্থতা, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি প্রভৃতি বিবেচনায় এনে আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত আসন্ন অর্থবছরে তামাক কর ও মূল্য সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবধরনের তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘বর্তমানে ৭৫ শতাংশ সিগারেট ব্যবহারকারী নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা। অথচ এই স্তরে সম্পূরক শুল্কহার মাত্র ৫৮ শতাংশ, এটা বাড়িয়ে কমপক্ষে ৬৩ শতাংশ করা হলে সিগারেটের ব্যবহার কমবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। এই বর্ধিত রাজস্ব চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত সাতটি মহানগরীর নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে প্রজ্ঞার গণমাধ্যম সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান বলেন, ‘২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনি, আলু, খোলা আটা, ডিম,সয়াবিন তেল ও গুঁড়ো দুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম গড়ে ২৭ থেকে ৮৯ শতাংশ বেড়েছে। অথচ একই সময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।’
তিনি বলেন, ‘তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।’