X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবির জগন্নাথ হলে বসে প্রাথমিকের প্রশ্নের সমাধান!

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:০৪আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১৭

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সমাধান হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে! পরে ওই প্রশ্নের উত্তর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হতো। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এর আগে শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের দুই সদস্য এবং তিন পরিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– চক্রের দুই সদস্য ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬), সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মন্ডল (৩০)। তাদের কাছ থেকে প্রশ্নের উত্তর সরবরাহে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার সাড়ে ৩ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এই পরীক্ষা চলাকালে উত্তরপত্র ও ডিজিটাল ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাত জন এবং রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে দুটি মামলা হয়। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি প্রশ্নপত্রের সমাধান পাওয়ার বিষয়ে জানান।

ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, মাদারীপুরে গ্রেফতার হওয়া পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যান। মাদারীপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ঘটনা তদন্তে নামে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনেই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।’

গ্রেফতার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, ‘জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাত শিক্ষার্থী ঢাবির জগন্নাথ হলে বসে প্রশ্নের সমাধান করে পরিক্ষার্থীদের পাঠাতেন। ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসীম গাইন তাদের দিয়ে প্রশ্নের সমাধান করিয়ে নিতেন।’

তিনি বলেন, ‘অসীম গাইন পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসীম গাইন।’

এক প্রশ্নের উত্তরে হারুন বলেন, ‘তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি, তাতে দেখা যাচ্ছে এই চক্রের মূল হোতা অসীম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। সে আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। অল্প দিনে কয়েকশ’ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। অসীমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা রয়েছে। সে পলাতক, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত সে বিষয় তদন্ত চলছে।’

/এবি/আরকে/
সম্পর্কিত
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
চিনি-লবণ মিশিয়ে নকল প্যাকেটে স্যালাইন তৈরি, গ্রেফতার ৩
জমি নিয়ে বিরোধ, বৈদ্যুতিক শকে চাচাতো ভাইকে ‘হত্যা’
সর্বশেষ খবর
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
সর্বাধিক পঠিত
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ