X
সোমবার, ২০ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গণমাধ্যমের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: আরাফাত

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৮ মে ২০২৪, ২১:৩৬আপডেট : ০৮ মে ২০২৪, ২১:৩৬

তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

বুধবার (৮ মে) রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে 'তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা' শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা জানান তিনি।

তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন সরকার নিশ্চিত করতে চায়। এই আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাস করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এই আইন করেছে। তবে যেকোনও একটি আইন সমাজে তৈরি হলে সে আইন বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এই আইনে যারা তথ্য নেবেন বা যারা তথ্য দেবেন, দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে। এ আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার নাকি অপব্যবহার হবে, সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে, তাদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার।

তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় জড়তা থাকে। যেগুলো জনসম্পৃক্ত তথ্য, জনগণের যেটা অধিকার, সে তথ্য দেওয়ার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদার অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন।

তথ্য অধিকার আইনের অধীন যে তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে, সে বিষয় নিয়ে অনেক সময় যারা তথ্য চাইবেন, তাদের পক্ষ থেকেও কিছু ভুল-বোঝাবুঝি থাকে, এ মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোন তথ্য গোপন তথ্য, সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর, যেগুলো গোপন আইনের অধীন রক্ষিত আছে, এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য—এসবের মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথষ্ক্রিয়া সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানো ও অপতথ্য মোকাবিলা করতে হবে। তবে সর্বসাধারণের জন্য তথ্য এবং জাতীয় স্বার্থে যেগুলোক পৃথিবীর সব দেশে স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য হিসেবে ধরা হয়, সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অঙ্গীকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই সাংবাদিকরা যেন এই আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন, এই আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা যেন সমাজে পাই। একই সঙ্গে এই আইনের দায়িত্বশীল ব্যবহার দেখতে চাই। যাদের এই আইনের অধীনে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে, তাদের প্রতি আহ্বান, যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুত সরবরাহ করা হবে, তত গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।

তিনি আরও বলেন, যে তথ্য জনগণের বলে তথ্য অধিকার আইন নিশ্চিত করছে, সেই তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে হবে। এই তথ্যগুলো যত দ্রুত সহজলভ্য করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এই ধরনের অন্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য তত ভালো। আমাদের সবার এই মানসিকতা তৈরি করা দরকার যে সঠিক তথ্য যত দ্রুত জনগণের কাছে চলে আসবে, এটা আমাদের জন্য মঙ্গল।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যারা তথ্য দেবেন না, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন কোনও ধরনের জড়তা বা মানসিক বাধা না থাকে। সরকার আরও চায় সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দ্রুত তথ্য সহজলভ্য করুক। আর যারা তথ্য চাইবেন, আমরা চাই তথ্য অধিকার আইন তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই আইন ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হোক, সেটাও আমরা চাই; যাতে এই আইনের অপব্যবহার কেউ না করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গ প্রতিমন্ত্রী আরাফাত বলেন, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

অপসংবাদিকতা হলে সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হন পেশাদার সাংবাদিকরা জানিয়ে তিনি বলেন, সব আইনেই কিছু অসৎ ব্যক্তি অপব্যবহারের সুযোগ নিতে চায়। সেটা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে কোনও সাংবাদিকতার চর্চা আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সিএসএ পেশাদার সাংবাদিকতাকে সুরক্ষা দেবে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

এ সময় তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী ফায়জুল হকসহ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের অর্থনীতি বিটের ৫০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

/এসআই/এনএআর/
সম্পর্কিত
শেখ হাসিনার লড়াইয়ের গল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গভর্নরের নীরবতা রহস্যজনক: ১২ দলীয় জোট
এবার বাজেটের আকার কত হচ্ছে, জানালেন ডেপুটি গভর্নর
সর্বশেষ খবর
হজ পালন করতে গিয়ে আরেক বাংলাদেশির মৃত্যু
হজ পালন করতে গিয়ে আরেক বাংলাদেশির মৃত্যু
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে অনিশ্চয়তা ছড়াচ্ছে ইরানে
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে অনিশ্চয়তা ছড়াচ্ছে ইরানে
বার্সার রানার্সআপ হওয়ার দিনে ধাক্কা খেলো রিয়াল 
বার্সার রানার্সআপ হওয়ার দিনে ধাক্কা খেলো রিয়াল 
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: মধ্যপ্রাচ্যসহ আঞ্চলিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: মধ্যপ্রাচ্যসহ আঞ্চলিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া
সর্বাধিক পঠিত
শনিবার ক্লাস চলবে ডাবল শিফটের স্কুলে
শনিবার ক্লাস চলবে ডাবল শিফটের স্কুলে
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
হিমায়িত মাংস আমদানিতে নীতিমালা হচ্ছে
হিমায়িত মাংস আমদানিতে নীতিমালা হচ্ছে
এনবিআর চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননার নোটিশ
এনবিআর চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননার নোটিশ
আগামী ৩ দিন হতে পারে বৃষ্টি, কমবে তাপপ্রবাহ
আগামী ৩ দিন হতে পারে বৃষ্টি, কমবে তাপপ্রবাহ