রেশনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠন আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরাম। শুক্রবার (১৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফোরামের উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করে এই দাবি জানায় তারা।
এ সময় শ্রমিকনেতা আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরামের সভাপতি বিলকিস বেগম বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা দ্রব্যেমূল্যের বৃদ্ধির কারণে পুষ্টিকর খাবার, সন্তানের সুশিক্ষা ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা মেটাতে পারছেন না। তাদের বাঁচার মতো মজুরি, রেশনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানাচ্ছি।
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ঊর্মি আক্তার বলেন, বর্তমান নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামা বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার মান একেবারেই নিম্নমুখী। এই কয়েক বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, বাড়ি ভাড়াসহ সবকিছুর ব্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। কিন্তু পোশাকশ্রমিকদের বাঁচার মতো মজুরি নির্ধারণ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এক ব্যক্তির মাসিক খাবারের জন্য ৫ হাজার ৩৩৯ টাকা প্রয়োজন। যদি কোনও পরিবার পুরো মাসে একবারও মাছ, মাংস ও মুরগি না খায়, তাহলেও খরচ হয় ৮ হাজার ১০৬ টাকা। এই খরচের মধ্যে খাবারের সঙ্গে এক কক্ষের ঘরভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল, চিকিৎসা ব্যয়, স্বাস্থ্যসুরক্ষার পণ্য কেনা, সন্তানের পড়ালেখার খরচ, যাতায়াত, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের বিল তো আছেই। গণপরিবহনের ভাড়াও বেড়েছে। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমে যাচ্ছে, সব দৈনন্দিন খরচ মিটিয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে যাচ্ছে।
পোশাকশ্রমিকদের ৯ দফা
পোশাকশ্রমিকদের দাবিগুলো হলো— রেশনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; বাঁচার মতো মজুরি নিশ্চিত করতে হবে; দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পুনর্বিবেচনায় আনতে হবে; বছর বছর ঘরভাড়া বৃদ্ধি বন্ধ করে তা শ্রমিক বান্ধব করতে হবে; প্রতিটি কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে; শ্রমিকদের সন্তানদের সুশিক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে এবং বায়ারদের ন্যয়সংগত ব্যবসানীতি মেনে ন্যায্য দামে পোশাক কিনতে হবে।
এ সময় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরামের সহসাধারণ সম্পাদক লিলি বেগমসহ ফোরামের অন্য নেতারা এবং বিভিন্ন কারখানার ইউনিয়নের শ্রমিকনেতারা।