X
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
৫ ফাল্গুন ১৪৩১
এমপি আনার হত্যা

ম্যাজিস্ট্রেটসহ আ.লীগ নেতা বাবুকে নিয়ে ফোন উদ্ধারে অভিযানের নির্দেশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৪ জুন ২০২৪, ১৭:০৭আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪, ১৭:২২

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুর রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৪ জুন) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহর আদালত এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে ঝিনাইদাহ কারাগারে পাঠানোর জন্য কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে এক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসহ বাবুকে নিয়ে তার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধারে অভিযানের নির্দেশ দেন আদালত।

এদিন বাবুর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান কাজী কামাল আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। বাবুর পক্ষে এ এস এম আবুল কাশেম খান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে মোবাইল ফোন উদ্ধারের অভিযানের নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এ এস এম আবুল কাশেম খান এ সব তথ্য জানান।

গত ৯ জুন আসামি বাবুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে রিমান্ড চলাকালীন আসামি বাবু স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। ওইদিন জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

৯ জুন রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এই মামলায় শিমুল ভূঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূঁইয়া ওরফে আমান উল্লাহ সাঈদ, তানভীর ভূঁইয়া ও সিলিস্তা রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শিমুল ভূঁইয়ার জবানবন্দিতে আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজী কামাল আহমেদ বাবুর প্রসঙ্গ উঠে আসে এবং বাবুর সঙ্গে শিমুল ভূঁইয়ার কিছু পরিকল্পনার কথা প্রকাশ পায়। শিমুল ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে আরও জানায়, সে গত ১৫ মে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসে ১৬ মে কামাল আহমেদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেন। ১৭ মে তারা সাক্ষাৎ করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা বিভাগ ৮ জুন আলামত উদ্ধারের লক্ষ্যে শিমুল ভূঁইয়ার লুটেরচর সাভারের ভাড়া বাসায় বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে অভিযান চালান। তার বাসায় একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। পরে মোবাইল ফোনের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মামলার ঘটনা পরবর্তী ১৬ মে থেকে হোয়াটসঅ্যাপে বাবুর সঙ্গে আসামি শিমুল ভূঁইয়ার যোগাযোগ ও কথোপকথনের তথ্য রয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামাল আহমেদ আসামি শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, ১৬ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে কামাল আহমেদ ভিকটিম আনোয়ারুল আজীম আনার অপহরণ সংক্রান্তে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন। পরদিন ১৭ মে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে কাজী কামাল আহমেদ বাবু অত্যন্ত পরিকল্পিত উপায়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানাধীন ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে গাড়ির ভেতর সাক্ষাৎ করে ভিকটিমকে অপহরণ ও পরবর্তীতে হত্যা সংক্রান্ত ছবি, টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়ে গোপন মিটিং করে।

গত ১২ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে মুমতারিন উল্লেখ করেন, মানিক মিয়া এভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজিম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লিখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেবো।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।

আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনও সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি, অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাবাকে অপহরণ করেছে।

এই মামলায় শিমুল ভূইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভূইঁয়া ও শিলাস্তা রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। রিমান্ড শেষে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে। এছাড়া গ্রেফতার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।

/এআই/আরকে/
সম্পর্কিত
কোপানোর ঘটনা ভাইরালআদালতে বিচারক বললেন, রাতে ভিডিওটি দেখে ঘুমিয়েছি
সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও জুনাইদ পলকের স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পরিবারসহ আ হ ম মোস্তফা কামালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
সর্বশেষ খবর
শেষ মুহূর্তের গোলে বায়ার্ন ষোলোতে, মিলানের বিদায়
চ্যাম্পিয়ন্স লিগশেষ মুহূর্তের গোলে বায়ার্ন ষোলোতে, মিলানের বিদায়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল-বৈষম্যবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল-বৈষম্যবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
পার্ক ঘেরাওয়ের পর সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন গ্রেফতার
পার্ক ঘেরাওয়ের পর সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন গ্রেফতার
ঢামেকে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেকে কারাবন্দীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন শফিকুল আলম
সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন শফিকুল আলম
দুদক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো কাজী সায়েমুজ্জামানকে
দুদক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো কাজী সায়েমুজ্জামানকে
উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা, পাল্টে গেছে শাহজালালের গ্রিন চ্যানেলের দৃশ্যপট
উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা, পাল্টে গেছে শাহজালালের গ্রিন চ্যানেলের দৃশ্যপট
নতুন রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ
নতুন রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ
সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট, আহত ৩০
সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট, আহত ৩০