গাজীপুরে ভুয়া র্যাব পরিচয়ে এক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের ১৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ডাকাতির ঘটনায় চক্রের অন্যতম সদস্য মিতুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। শনিবার (৬ জুলাই) রাতে ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১-এর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে র্যাব-১ সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (অপস অ্যান্ড মিডিয়া অফিসার) মো. মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে র্যাব-১ সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, গত ৬ জুন বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের সেলভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানার ৩ নম্বর গেটের সামনে ভুয়া র্যাব পরিচয়ে কারখানার ৩ কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ ও জিম্মি করে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ও ট্রাক ভাড়ার ১৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। পরে সেই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করে। এতে এলাকাজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়। পরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলটির অন্যতম প্রধান আসামি দুর্ধর্ষ নারী সদস্য মিতুকে গ্রেফতার করা হয়।
যেভাবে ছিনতাই করে চক্রটি
গ্রেফতারের পর মিতুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানায়, মিতু ডাকাতির ঘটনায় আগেই গ্রেফতার হওয়া অপর আসামি মো. রুবেল ইসলামের পরিচিত। রুবেলের মাধ্যমেই মিতু ডাকাতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে মূলত ব্যাংকের গ্রাহক সেজে ভেতরে নজরদারি করতো। তার দায়িত্ব ছিল ব্যাংক থেকে কারা বড় অঙ্কের টাকা তুলছে এবং তুলনামূলক সহজ টার্গেট কারা; তা খুঁজে বের করা। ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় গিয়ে সে যাচাই-বাছাই করে ভেতর থেকেই টার্গেট নির্ধারণ করে দলের অন্য সদস্যদের ফোন বা মেসেজ করে জানাতো। পরবর্তী সময়ে টার্গেট করা ব্যক্তি ব্যাংক থেকে টাকাসহ বের হলে মিতু তাকে ফলো করে বাইরে আসতো। সুযোগ বুঝে ইশারায় বাইরে থাকা অন্য সদস্যকে দেখিয়ে দিতো।
র্যাব বলেছে, অত্যন্ত ধূর্ত এই মিতু টার্গেটের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনতো এবং টার্গেটের রুটপ্ল্যান বোঝার চেষ্টা করতো। মূলত মিতুর কাজ ছিল ডাকাত দলের সদস্যদের কাছে টার্গেটকে মার্ক করে দেওয়া এবং টার্গেট সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব তথ্য সরবরাহ করা।
উল্লেখ্য, এই ডাকাতির ঘটনায় এর আগে গত ১২ জুন আরেকটি অভিযানে র্যাব-১ এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের মূল হোতাসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বহুলভাবে প্রচারিত হয়।
গ্রেফতারকৃত মিতু দীর্ঘদিন ধরেই এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সে এই ডাকাতি এবং সংঘবদ্ধ ডাকাত দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। ডাকাত মিতুকে থানায় সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।