মোবাইল ফোনে তুষারের মায়ের পরিচয় হয় বাদলের সঙ্গে। বাদল তাকে ধর্মবোন বলে সম্বোধন করেছেন। একাধিকবার দেখাও করেছেন তারা। গত ৩০ সেপ্টেম্বরও আবারও দেখা করার জন্য তারা সিদ্ধান্ত নেন। সেদিন সন্তান তুষারকে নিয়ে সদরঘাটের সোয়ারীঘাট এলাকায় বাদলের সঙ্গে দেখা করতে যান ওই নারী। পরে তুষারকে চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে আড়ালে নেন। অপেক্ষার পরে বুঝলেন বাদল তার ছেলেকে নিয়ে পালিয়েছে।
ওই নারী অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শেষে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তার স্বামী বাদী হয়ে একই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। তবে লিখিত অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে তুষারকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে তুলে দেয় র্যাব।
রবিবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজধানীর সদরঘাট থেকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নূর তুষারকে (৮)। অপহরণের ছয় দিন পর শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে র্যাব-২ ও ৮-এর যৌথ অভিযানে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর তুষারকে অপহরণ করা হয়। পরে ২ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী তুষারের মাকে ফোন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ছেলের প্রাণনাশ করবে বলে হুমকি দেয় মাকে। সন্তানকে ফিরে পেতে ওই নারী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারীদের ছয় হাজার টাকা দেয়। এ ঘটনার পর তার স্বামী র্যাব-২-এ লিখিত আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার রাতে অভিযানে নামে র্যাব-২ ও ৮-এর যৌথ দল। তারা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমরাগাছি হোগলপাতি নামক এলাকায় তুষারের অবস্থান শনাক্ত করে। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা তুষারকে রেখেই পালিয়ে যায়। পরে তুষারকে উদ্ধার করে অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে অপরিচিত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার আগে তার বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নেওয়ার অনুরোধও করেছেন তিনি।