সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাপত্তারক্ষীকে অপহরণ ও গুমের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার দেখিয়েছে আদালত। বুধবার (১৬ অক্টোবর) তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. তহিদুল ইসলাম তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তাকে গ্রেফতার দেখান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৯ সালে পিলখানার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করার কারণে সেনাবাহিনী থেকে জোর করে কর্নেল তৌহিদুল ইসলামকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। এরপর ২০১৬ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রধান প্রটেকশন অফিসার (নিরাপত্তা রক্ষী) হিসেবে কাজ শুরু করেন। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষী পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয় তাকে। সরতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে তাকে গুম করা হয়। এরপর দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। এসময় তাকে ২৫ দিনের জন্য জেল খাটানো হয়।
এ ঘটনায় সম্প্রতি নিউ মার্কেট থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীসহ ১০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন তৌহিদুল ইসলাম।
গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করার কথা জানায় পুলিশ। পরে নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, জিয়াউল আহসান ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র্যাব) দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে তিনি র্যাব ছাড়ার আগ পর্যন্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকার সময় তাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) ডিডিজি হিসেবে বদলি করা হয়। পরে তাকে সেখান থেকে এনএসআই’র পরিচালক হিসেবে সংযুক্ত করা হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালে তিনি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক হন তিনি। ২০২২ সালে এনটিএমসি’র মহাপরিচালক (ডিজি) করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এনটিএমসি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।