রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের নতুন করে ভাবতে হবে। সঠিক সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। যথাযথ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। যথাযথ সংগঠনকে সমাধানের দায়িত্ব দিতে হবে। সর্বোপরি রোহিঙ্গা সংকট সমাধান গতানুগতিক ধারার বাইরে চিন্তা করতে হবে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ইউনিটি ফর বাংলাদেশ আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা: বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিক বিবেচনাসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
অভিবাসন ও উদ্বাস্তু বিশেষজ্ঞ সিআর আবরার বলেন, রোহিঙ্গাদের গত সরকারের আমলে রোহিঙ্গা বলা যেতো না। নব্বইয়ের দশক থেকে রোহিঙ্গাদের উপর স্লো বার্নিং জেনোসাইড চলছিল, তখন এগুলো নিয়ে কেউ কথা বলেনি। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার ডেলিগেট আসলে তাদের সামনে সরাসরি সমস্যার কথা না বলেও অনেক অনুযোগের সুরে সবাই ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বলছিল। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো না দিয়ে এমন একটি সংগঠনকে দেওয়া হলো- যাদের এ বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা নেই।
তিনি আরও বলেন, এই সমস্যা সমাধানের আমাদের আগে হোমওয়ার্ক করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ যাবতীয় সেবা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীও এসব তাদের দিতে হবে। তাদের এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের আউট অব দ্য বক্স চিন্তা করতে হবে। তারপর আমরা দেখবো কী হবে সমাধানের অপশন।
এসময় আরও বক্তব্য দেন লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সায়মা আহমদ ও রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান। এসময় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন ও সঞ্চালনা করেন অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান।
আলোচনা সভার শুরুতে আলতাফ পারভেজ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তার অভিজ্ঞতালব্ধ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। বেশ কয়েকবার পাঠালেও তাদের আবারও চলে আসতে হয়। আমরা স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার উপর আমাদের পলিসি নির্ভর করছে। রাখাইনের উদ্ভূত পরিস্থিতি আমাদের বেশ কিছু আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে আরও বেশি রিফিউজি আসে কি-না, এবিষয়ে আমি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছি। জানিয়েছি তারা যেন আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে। এটি কাজ হবে মনে হয়। আর আমরা হুট করে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাই না, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।