স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজিবির সদস্যরা ছাত্র-জনতার দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আন্দোলনে আহত ও নিহত ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের সহায়তার ক্ষেত্রেও বিজিবি এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। আহত ছাত্র-জনতাকে নিজস্ব উদ্যোগে চিকিৎসাসেবা ও তাদের পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বিজিবিকে জনমানুষের আস্থা ও ভালবাসার প্রতীকে পরিণত করেছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বিজিবির বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের ‘বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে’ বিজিবির ১০২তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার দেশপ্রেমিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিজিবি সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং সীমান্তের ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করছে। পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক পাচাররোধ, নারী ও শিশু পাচারসহ যেকোনও ধরনের সীমান্ত অপরাধ দমন এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় দক্ষতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি।’
নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের অলঙ্কার। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনও পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকরা এসব গুণাবলির প্রতিফলন ঘটিয়ে বাহিনীর ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘সৈনিকদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার ওপরই বাহিনীর ভাবমূর্তি ও গৌরব নির্ভর করে। সীমান্তে দায়িত্ব পালনের সময় প্রতিপক্ষ বাহিনীর কাছে কোনও অবস্থাতেই পিঠ প্রদর্শন করা যাবে না। বিজিবি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিয়ে দেশের মানুষের নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করবে। বিজিবি হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক।’
১০২তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ৩০ জুলাই বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে (বিজিটিসিএন্ডসি) শুরু হয়। প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে সর্বমোট ৬৯৫ জন রিক্রুটের মধ্যে ৬৪৯ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। ২৩ সপ্তাহের এ প্রশিক্ষণ শেষ করে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীম, আইজিপি বাহারুল আলম এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।