ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক, অবিচারিক সুলভ আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচারের অভিযোগ এনে তাকে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বুধবার এ আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আবেদনের বিষয়টি জানা গেছে।
আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি যোগদানরত ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম প্রতিনিয়ত জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য অসৌজন্য অবিচারিক সুলভ, অযাচিত বক্তব্য প্রদান এবং বিচারপ্রার্থীদেরকে প্রকাশ্য আদালতে গালমন্দসহ অশ্লীল বক্তব্য ও অবিচারিক আচরণ করতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র ও সাধারণ আইনজীবীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বার অ্যাসোসিয়েশন ও বেঞ্চের মধ্যে আদালত অঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে আলোচনার অনুরোধ করা হয়। বিচারক নুরে আলম সাক্ষাৎ বা আলোচনা কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি এডিসি নাসির আহমেদ হাওলাদার ও এসি প্রসিকিউশন হাসান রাশেদ পরাগের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আদালতের এজলাস শুরু করেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ওই আদালতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কোনও কর্মকর্তা বা কার্যকরী সদস্য কোনও মামলা বা জামিন শুনানি করেননি।
বিচারক নুরে আলমের এমন আচরণের সংবাদ পেয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বিচারক নুরে আলমকে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে আলোচনার বিষয়ে জানতে চান। বিচারক নুরে আলম প্রথমেই বলেন, "আমি কি ঢাকা আইনজীবী সমিতির চাকরি করি? কেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কমিটির সাথে আমার কথা বলতে হবে।" আমি চাকরি না করলেও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সহিত কথা বলবো না।"— এই বলে পুলিশকে আদেশ দেন, "এই পুলিশ ওদেরকে বের করে দাও।"
বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক অশ্রাব্য ভাষা ও আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে উপস্থিত আইনজীবীদের উত্তেজিত করেন। তার পরিহিত ড্রেসের কোটে হাতা উপরের দিকে টেনে মারমুখী হয়ে ওঠে গুলি করতে বললে কোর্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
বিচারক নুরে আলম বিভিন্ন অসত্য তথ্য ও এজলাসের আংশিক ভিডিও বেআইনিভাবে যমুনা টিভির মাধ্যমে অপপ্রচার করে আইনজীবীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও বাংলাদেশের মানুষসহ সারা বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়াস চালাচ্ছে, যা বিচার বিভাগের জন্য কোনওভাবেই কাম্য নয়।
বিচারক নুরে আলমের অসৌজন্য অবিচারক সুলভ, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচার অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা করেন তিনি।
জানা গেছে, বিচারক নুরে আলম বুধবার থেকে ছুটিতে রয়েছেন।