সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নিয়ে করা প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের পোস্টে লাইক ও কমেন্ট করায় শোকজ করা হয়েছে মৎস্য অধিদফতরের পাঁচ কর্মকর্তাকে। অধিদফতরের মহাপরিচালক মো.আবদুর রউফ গত ৪ মে ওই কর্মকর্তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেসবুকে লাইক-কমেন্ট করার অভিযোগে নোটিশ পাওয়া কর্মকর্তারা সাময়িক বরখাস্ত বা বদলির মতো শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।
নোটিশ পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন—মৎস্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এ এস এম সানোয়ার রাসেল, মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দফতরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক সালমুন হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান, ইলিশসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক ফরিদ হোসেন ও সহকারী প্রধান আবু মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের নিজের ওয়ালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেনকে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই তোফাজ্জল (পোস্টে লেখা বানান) যিনি দুই দফায় দু’জন আওয়ামী মন্ত্রীর পিএস ছিলেন (৬ বছর), তাকেই সচিব পদে পদোন্নতি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বানানোর জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি আরও অনুরোধ করছেন— সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় লাগলে অন্য কাউকে পদায়ন না করে, এই তোফাজ্জলকেই এ পদে রাখার জন্যে।’ সেই পোস্টে প্রতিক্রিয়া (রিঅ্যাক্ট) জানান ও মন্তব্য করেন ওই পাঁচ কর্মকর্তা।
পৃথক পৃথক নোটিশেই বলা হয়েছে, এহেন আচরণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার সন্তোষজনক জবাব তিন কার্যদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছিল।
এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো.আবদুর রউফের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের স্টাফ অফিসারের কল করলে তিনি জানান, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি অধিদফতরের প্রশাসন শাখায় যোগাযোগ করেন।
মৎস্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ইমাম উদ্দিন কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। আমার হাত দিয়ে এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমি জানি না।
প্রশাসন অধিশাখাকে না জানিয়ে অধিদফতরের কোনও কর্মকর্তা- কর্মচারীকে শোকজ করার এখতিয়ার অন্য কারও আছে কিনা, জানতে চাইলে ইমাম উদ্দিন কবীর বলেন, ‘আছে, অনেকেই তা করতে পারেন।’ মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) এস এম রেজাউল করিমের মোবাইলে কল করা হলে তিনি কেটে দেন।