প্রশাসন ক্যাডারের ‘বৈষম্যমূলক আচরণের’ প্রতিবাদে সারা দেশে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার (২৭ মে) কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন। ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর আহ্বানে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন দফতরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কর্মসূচির আওতায় সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ জরুরি সেবাগুলো এই কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত ছিল। একই দাবিতে আগামীকালও (বুধবার) একই সময়ে সারা দেশে আবারও কলমবিরতি পালিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডারের কিছু সদস্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে মারামারি, মিছিল ও জনপ্রশাসনে শোডাউন করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির সূত্র ধরে প্রশাসন ক্যাডার এবং বাকি ২৫টি ক্যাডারের সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে ২৫টি ক্যাডারের ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও, প্রশাসন ক্যাডারের কেউ শাস্তির মুখোমুখি হননি বলে অভিযোগ করেছে পরিষদ।
পরিষদের দাবি, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দুর্নীতিমুক্ত জনসেবা নিশ্চিত করার কোনও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বরং এই কমিশন একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠীগত স্বার্থে পক্ষপাতদুষ্টভাবে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা, উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে বাকি ৫০ শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে অন্য ক্যাডার থেকে নিয়োগের সুপারিশকে পরিষদ ‘জুলাই বিপ্লব’-এর চেতনার পরিপন্থী বলে মনে করে।
পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘কৃত্য ও পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডিএস পুলের কোটা বাতিল এবং সকল ক্যাডারের সমতা বিধান’—এই তিনটি মূল দাবিকে কেন্দ্র করে তারা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে কাজ করছে। ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে সেমিনার, গোলটেবিল বৈঠক ও আলোচনা সভার মাধ্যমে নিজেদের দাবিগুলো তুলে ধরলেও, সেগুলো কমিশনের প্রতিবেদনে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
এর আগে গত ২০ মে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা বিকাল ৫টা ১০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।