বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি এখনও চাপের মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
বুধবার (২৮ মে) প্রকাশিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিবেদনে এমসিসিআই এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রফতানি আয় ও প্রবাসী আয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গ্রামীণ অর্থনীতির গতিশীলতাও ধীরে ধীরে ফিরছে, যা সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত বয়ে আনছে। তবে ব্যাংকিং খাতে পুরনো অনিয়ম এবং ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে অর্থনীতির পূর্ণাঙ্গ পুনরুদ্ধারে বিলম্ব হয়েছে।
এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "পতিত সরকারের সময়ে ব্যাংক খাতে মারাত্মক দুর্বলতা ও বড় ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে অর্থনীতির অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।" তবে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য যে সাম্প্রতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা জিডিপি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছে।
বিশ্বজুড়ে চলমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমসিসিআই উল্লেখ করেছে, এসব সংকট দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
রফতানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে রফতানি আয় ও প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ডলারের সরবরাহে স্বস্তি এনেছে।
অন্যদিকে, ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম এবং খেলাপি ঋণের সমস্যা এখনও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বাংলাদেশ ব্যাংক বড় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে এবং নতুন ব্যাংক সংস্কার কর্মসূচি চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সার্বিকভাবে এমসিসিআই বলেছে, দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পথে থাকলেও টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যাংকিং খাতের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার, নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা খুব জরুরি।