সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ সকলের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের ভালো কাজই হোক আমাদের রাজনীতি।
বুধবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় আলোকচিত্রের ‘রূপসী বাংলা’ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে দুইজন ফটোসাংবাদিককে সম্মাননা দেওয়া হয় এবং তিনজন সেরা ফটোসাংবাদিকের নাম ঘোষণা করা হয়।
শারমিন এস মুরশিদ বলেন, আলোকচিত্র একটি অত্যন্ত ক্ষমতাশীল মাধ্যম। ভাষা যেটা ব্যক্ত করতে পারে না, কিন্তু একটি ছবি হাজারটা কথা ব্যক্ত করতে পারে। আমরা এই ক্ষমতাটা... আপনারা যারা এই দক্ষতা ধারণ করেন এবং এই ইতিহাসটা যুগ যুগ ধরে ছবির মধ্য দিয়ে রক্ষা করছেন তারা হলেন ফটোসাংবাদিক। ফটোসাংবাদিকদের এই আজকের রূপসী বাংলা প্রদর্শনী, বাংলার রূপ মানুষের সম্মুখে আনতে চায়।
তিনি বলেন, আসলে এই বাংলার রূপটা কী? আমার তরুণ সমাজ আমার বাংলার রূপ। জুলাই আন্দোলন বাংলার রূপ। একাত্তরের যুদ্ধ তরুণরা করেছিল, ঠিক তেমনি ২৪শের যুদ্ধও তরুণরা করেছিল। এই যে ছাত্র-জনতা, তরুণ সমাজের সত্যের যে নিষ্ঠা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ— এটাই বাংলার রূপ। যুগে যুগে আমরা এই রূপটাকে ধারণ করতে চেয়েছি। আমার গণতন্ত্র, সমতা, ন্যায্যতা সব কিছু যেন হারিয়ে যেতে চায়। এবং বারবার এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সেটা ফিরিয়ে আনি। আপনারা সেই ফিরিয়ে আনা সংগ্রামের সৈনিক। আপনাদের ছবিগুলো আমরা দেখেছি পত্রিকায়। একটা অনুরোধ এই ইনস্টিটিউশনে এমন একটি জায়গা তৈরি হোক যেখানে আপনাদের তৈরি করা ছবির সুরক্ষা মধ্য দিয়ে সংরক্ষিত থাকবে। আপনাদের তৈরি করা ছবি দিয়ে সাইবার স্পেসে ফটো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে আমরা সংগ্রামী চিত্রগুলো যুগ যুগ ধরে খুঁজে পাই।
আলোকচিত্রীদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের কাছে আমার একটা ছোট দাবি আছে, এই মুহূর্তে আমার দেশের বাচ্চারা, নারীরা, তরুণীরা, পুরুষ সমাজ, ছেলেমেয়েরা খুব সংকটে আছে। নানান রকম অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আপনারা শুধু নির্যাতন-বর্বরতার ছবি নয়। আমাদের আশার আলো দেখান। এই বাচ্চাদের পাশে দাঁড়ান। আমাদের মন্ত্রণালয় এককভাবে তাদের সুরক্ষিত রাখতে পারবে না। এটা সকল মানুষকে করতে হবে। আমরা এই দেশটাকে সুন্দর, সুরক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি। এই দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার দ্বিতীয়বার যে সুযোগ পেয়েছি, আপনারা মেধাবী, যে পেশায় বিরাজমান সেই ক্ষমতায় আমাদের পাশে দাঁড়ান। আমরা দেশটাকে সুন্দর করে তুলবো। নতুন করে গড়ে তুলবো। ধর্ম-বর্ণ সকলের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের ভালো কাজই হোক আমাদের রাজনীতি।
বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসীনের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রজাতন্ত্র কিউবার অনারারী কনস্যুল ওবেইদ জায়গীরদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিপিজেএর সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, সিনিয়র সহসভাপতি মশিউর রহমান সুমন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সালেকুজ্জামান চৌধুরী রাজিবসহ বিপিজএ সদস্যরা।