রাজধানী ঢাকার যানজটে বছরে প্রায় ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এই হিসাবে প্রতিবছর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ৩৭ হাজার কোটি টাকার; যা দিয়ে দুটি মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন করা সম্ভব। রাজধানীতে সৃষ্ট এই অচলাবস্থাকে উন্নয়নের বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক পরিবহন ও সেতু) ড. শেখ মঈনুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত ‘মাসিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক অন্তর্দৃষ্টি: বাজেট পরবর্তী একটি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈনুদ্দিন বলেন, ‘দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, ডিজাইন এবং বাস্তবায়নের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। সড়ক, রেল, নৌ এবং বিমান পরিবহন নিয়ে চারটি মন্ত্রণালয় কাজ করে, কিন্তু তাদের মধ্যে নেই কার্যকর সমন্বয়। এক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও সমন্বিত পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। একটি প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুমোদন পেতেই লেগে যায় চার থেকে পাঁচ বছর। এরমধ্যে এক্সচেঞ্জ রেটসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাই এখনই প্রয়োজন একটি টেকসই 'ট্রান্সপোর্টেশন মাস্টারপ্ল্যান'।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার ও মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনের ডেপুটি চিফ ক্লিনটন পবকে।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সিইও ফেরদৌস আরা বেগম এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, রাজধানীসহ দেশের সার্বিক পরিবহন ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ের অভাবই অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি দেশকে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে নিতে হলে ট্রান্সপোর্ট ও লজিস্টিক খাতকে প্রথমেই ঢেলে সাজাতে হবে।