পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা, বিচরণকৃত বৃক্ষ চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
রবিবার (২৯ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এদাবি জানানো হয়েছে।
এতে পাখির বিচরণ আছে এমন বৃক্ষ চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ঝালকাঠির সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন গ্রামে তালগাছটি কেটে ফেলার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে এ পত্রের মাধ্যমে।
ইতিমধ্যেই এসব দাবি জানিয়ে সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, প্রধান বন সংরক্ষক, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বরিশালের উপ বন সংরক্ষক চিঠি পাঠিয়েছে বেলা।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন গ্রামে একটি তালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যেখানে বাসা বেঁধেছিল বেশ কয়েক জোড়া বাবুই পাখি। তালগাছটি বহু বছর ধরে উক্ত এলাকার অনেক বাবুই পাখিদের প্রধান আশ্রয়স্থল। গাছটি কেটে ফেলার ফলে অসংখ্য বাবুইছানা, ডিম ও বাসা মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায়। কেটে ফেলা গাছের নিচে পড়ে থাকে আহত ও মৃত পাখির ছানা ও ভাঙা বাসাগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাল গাছটির মালিক গাছটি বিক্রি করলে ক্রেতা গাছটি কেটে ফেলে। গ্রামবাসীদের অনেকে গাছ কাটার বিরোধিতা করলেও কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে গাছটি কেটে ফেলে ৫ শতাধিক বাবুই পাখির বাচ্চা, ডিম ধ্বংস করে। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি অবগত হলেও অদ্যাবধি কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
ইতোপূর্বে ২০২৩ সালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফকিরহাটে বটগাছের ডালপালা কেটে আশ্রয়হীন করে দেয় হাজার হাজার চড়ুই আর শালিক পাখিদের এবং ২০২৪ সালে একটি জাতীয় পত্রিকা থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়ক প্রশস্ত করার কারণে অনেকগুলো ছোট বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে আর তাতেও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে অনেক পাখি।
অতীতে এভাবে অনুমোদনহীন গাছ কেটে পাখির আবাসস্থল ধ্বংসের ঘটনার সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্তের অভাবে একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটছে; যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার পরিচায়ক বলেও মন্তব্য করেছেন বেলা।