ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে আজ (১৭ মে) থেকে ১০ দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময় নির্মাণাধীন ভবন ও বাসাবাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়ায় কয়েকজনকে ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ সকালে রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অভিযান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা।
গত ১১ মে রাজধানীর উত্তরায় এডিস ও ডেঙ্গুবিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক পথসভায় ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসি এলাকায় ১০ দিনের মশা (ডেঙ্গু ও এডিস) নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। ২৬ মে পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
আজকের অনুষ্ঠানে মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘মেয়র মহোদয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, যেকোনও ভবনে, নির্মাণাধীন বাড়িতে, সরকারি-বেসরকারি বা আধাসরকারি যেকোনও প্রতিষ্ঠানে, এমনকি সিটি করপোরেশনের কোনও অফিসে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। লার্ভা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সারা বছরব্যাপী নিয়মিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চলমান থাকে। এই মৌসুমে মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা ইতোমধ্যে হটস্পর্ট চিহ্নিত করে অঞ্চল ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।’
সেলিম রেজা নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করে বলেন, ‘নিজ নিজ বসতবাড়িতে জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে এডিসের উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। সবাই মিলে সচেতন হলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ডিনসিসির পুরো এলাকায় চারশ’ বর্গগজ আয়তনে বিভক্ত করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৯৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক তালিকাবদ্ধ করে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’
এ সময় তিনি অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোট ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আজ অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর ৪, ৬, ৮ এবং ওয়ার্ড ১৭ এর নিকুঞ্জ-১, ২ ও জামতলা, টানপাড়া এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার করেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন, ঝোপঝাঁড়ে কিউলেক্স মশকবিরোধী অভিযান ও সমন্বিতভাবে এডিসবিরোধী অভিযানে ৫টি স্থানে লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ২টি নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অঞ্চল-৬ এর ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর-১১ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে ২টি স্থানে মালিকবিহীন পরিত্যক্ত টায়ারে এবং ২টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভা পাওয়া স্থানগুলোতে লার্ভা ধ্বংস করে ২ জন ভবন মালিককে ২টি মামলায় ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
