মাত্র মাস দুয়েক আগের কথা। রাজধানীর সদরঘাটে ঈদুল ফিতরের দিন লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। ঈদের দিন প্রিয় মানুষের এমন মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা। সেদিনের দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে জানা গেছে, অন্য আরেকটি লঞ্চ দাঁড়িয়ে থাকা লঞ্চকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচ জন তাৎক্ষণিক মারা যান। আজও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারতো!
শুক্রবার (১৪ জুন) বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা-লালমোহনগামী মানিক-৯ লঞ্চটি পাংগাসিয়া-গাছিরখালগামী এমভি পারাবত নামে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লঞ্চে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে পারাবত লঞ্চটির রশি প্রায় ছিঁড়ে যায়। টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ধাক্কা খেয়ে পারাবত লঞ্চটি আবার অন্য আরেকটি লঞ্চে ধাক্কা দেয়। এতে দুই লঞ্চের যাত্রী এবং টার্মিনালে থাকা যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের একজন লঞ্চের মাস্টার মতিউর রহমান, আরেকজন তার সহযোগী রিপন শিকদার।
মানিক-৯ লঞ্চটির ধাক্কায় মুহূর্তের মধ্যে পুরো টার্মিনাল নড়ে ওঠে। টার্মিনালে লঞ্চে যাতায়াতের জন্য আসা লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ভোলাগামী যাত্রী শিহাব উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। আজ লঞ্চ চালকের ভুলের মাশুল আমাদের গুনতে হতো। ভাগ্যিস পারাবত লঞ্চটির রশি পুরোপুরি ছিঁড়ে যায়নি। নয়তো গত ঈদের মতো আজও একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটতো।’
ঘটনাস্থলে ছয় বছরের সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী রেজিয়া বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লঞ্চের ধাক্কায় হাত থেকে আমার সন্তান পড়ে যায়। মুহূর্তের জন্য মনে হলো কী যেন হতে যাচ্ছে। লঞ্চ এত জোরে ধাক্কা দিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেই পড়ে গেছে। ভাগ্য ভালো বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
এই যাত্রী আরও বলেন, ‘এত জোরে ধাক্কা দেওয়ার পরও লঞ্চের স্টাফ বা চালকদের কোনও অনুশোচনা নাই। তারা বলছেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আমি চাই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’
সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে আটক করেছি।’
তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওসি স্যার থানায় এলে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’
আরও পড়ুন...
সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের মৃত্যু
সদরঘাটে নিহতদের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের