X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
২০ বৈশাখ ১৪৩২
বাংলা ট্রিবিউনকে পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের রূপরেখা ঠিক হবে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৯ জুন ২০২৪, ২০:৫৪আপডেট : ১৯ জুন ২০২৪, ২১:২৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে দুই দেশ। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা কী হবে সে বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতার কাছ থেকে নির্দেশনার বিষয়ে কাজ চলছে। শুধু তাই না, নতুন নতুন ক্ষেত্রে সম্পর্ক কীভাবে বাড়ানো যায়, সেব্যাপারেও একটি ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি জানান, এই সফরে সই হতে পারে ১০টিরও বেশি দলিল। 

এবারে সফরে অগ্রাধিকার কী কী—জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আমরা আগামীতে কোথায় নিয়ে যেতে চাই, এ ধরনের একটি ভিশন কাজ করবে দুই দেশের মধ্যে। নিত্যদিনের যে বিষয়গুলো সেগুলো থাকবে। এর পাশাপাশি এই সফরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ ভবিষ্যতে আমরা দুই দেশের সম্পর্ককে কোথায় নিয়ে যেতে চাই এবং নতুন নতুন ক্ষেত্র কী আছে – সেটি পরিবেশ হতে পারে, সেটি স্পেস সহযোগিতা হতে পারে, বৃহৎ কানেক্টিভিটি সহযোগিতা এবং এটি যতদূর চিন্তা করতে পারেন – আমার মনে হয় এগুলো অগ্রাধিকার হিসেবে থাকবে।’

সফরে কতগুলো দলিল বা চুক্তি সই হতে পারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘অনেকগুলো নিয়ে কাজ চলছে। তবে আমরা ১০টিরও বেশি ইন্সট্রুমেন্ট সই হবে বলে আশা করছি।’

অমীমাংসিত ইস্যু

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো যেমন—সীমান্ত হত্যা, পানি বন্টন সমস্যা বা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নন ট্যারিফ ব্যারিয়ার এসব বিষয় কয়েক বছর ধরে আলোচনায় আছে এবং আরও কয়েক বছর হয়তো আলোচনায় থাকবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সীমান্ত বিষয়ে আমাদের কাঙ্ক্ষিত অবস্থান হচ্ছে হত্যা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে এবং নন-লিথাল (প্রাণঘাতী নয়) অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়গুলো কর্মকর্তা স্থরে আলোচনা হচ্ছে এবং আমাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে।’

পানি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গঙ্গা চুক্তির পুনঃনবায়নের বিষয়ে অবশ্যই কথা হবে। তিস্তার বিষয়ে চুক্তি যে পর্যায়ে আছে – সেটি নিকট ভবিষ্যতে কোনও ধরনের কিছু হবে, এ ধরনের কোনও পরিস্থিতি আমরা দেখছি না।’

তবে যেটি আশার কথা সেটি হচ্ছে তিস্তাকে ঘিরে উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে ভারত সাম্প্রতিক সময়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। সেটার বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর বিষয় রয়েছে। এটির সঙ্গে তিস্তা চুক্তির সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। অবশ্যই বড় কোনও প্রকল্প হলে পানি যতটুকু থাকা দরকার, সেটি নিশ্চয় বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘পানি নিয়ে বৃহৎ যে ভিশন অর্থাৎ নদী ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ নিয়ে দুই দেশ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে – এটি নিয়ে আলোচনা চলবে।’

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রায় ১৪০০ কোটি ডলার এবং এটি তাদের দিকে বেশি। কিন্তু আমাদের পরিমাণ বাড়ছে এবং এটি কীভাবে বাড়ানো যায় সেটি নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। সবচেয়ে বড় যেটি বিষয় হলো সেপার (কমপ্রিহেনসিভ ইকোনোমিক প্রেফারেন্সিয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট) কাজ শুরু হওয়ার ইঙ্গিত থাকবে। সেপা হলে সমস্যাগুলো ঠিক হয়ে যাবে, তিনি জানান।

সচিব বলেন, ‘এই সফরে বৃহৎ যে নির্দেশনা এবং নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা– এ বিষয়গুলো আমরা পাবো আশা করছি।’

কানেক্টিভিটি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে বড় অগ্রগতি হতে পারে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যে অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে সেটি আমাদের জন্য। যেমন পায়রা বন্দর, মোংলা বন্দর, চিটাগাং বে টার্মিনাল, মাতারবারি গভীর সুমদ্র বন্দর বিভিন্ন ধাপে চালু হবে। সবগুলো যখন চালু হবে, তখন আমরা এর একটি বড় অংশ ব্যবহার করবো। এটির অতিরিক্ত যে সক্ষমতা থাকবে, সেটি আমরা ভালোমতো ব্যবহার করতে পারবো যদি আমাদের সঙ্গে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি থাকে।’

ভারতের উত্তর-পূর্ব, নেপাল বা ভুটানের সঙ্গে রেল কানেক্টিভিটি, পানি কানেক্টিভিটি, রোড কানেক্টিভিটি গুরুত্বপূর্ণ হবে। এটি যদি থাকে, তবে আমাদের সক্ষমতার সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবো। আমাদের ওপর অন্যরা যদি নির্ভরশীল হয়, তবে আমাদের ওপর লেভারেজ বাড়বে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক সমৃদ্ধি চিন্তা করতে পারি। আমাদের লাভ থাকতেই হবে এবং একইসঙ্গে আমাদের আশেপাশে যারা আছে তারাও যদি লাভবান হয়, তাহলে এটি সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’

আরও পড়ুন- 

শেখ হাসিনার ২৬ ঘণ্টার দিল্লি সফর: কী আছে সূচিতে

শেখ হাসিনার ‘নজিরবিহীন’ ভারত সফরে সঙ্গী হচ্ছেন যারা

/এফএস/
সম্পর্কিত
ভারতের গোয়ায় মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৬
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিফজলুর রহমানের মন্তব্য ব্যক্তিগত
বাংলাদেশ সব বকেয়া পরিশোধ করবে, আশাবাদী আদানি পাওয়ার
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনের কাছে এফ-১৬ প্রশিক্ষণ বিমান বিক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের কাছে এফ-১৬ প্রশিক্ষণ বিমান বিক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
৫০০ কর্মীর সমন্বয়ে ডিএসসিসির মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান
৫০০ কর্মীর সমন্বয়ে ডিএসসিসির মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান
বার্সার বিপক্ষে ফিরতি লেগে অনিশ্চিত মার্তিনেজ
বার্সার বিপক্ষে ফিরতি লেগে অনিশ্চিত মার্তিনেজ
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
সর্বাধিক পঠিত
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’