X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচণ্ড হিংসার মনোভাব নিয়ে মন্দির ভাঙা হয়েছে: সুলতানা কামাল

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০২ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:৫২আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০১৬, ১৯:৩১

সুলতানা কামাল নাসিরনগর যেন আরেক একাত্তর বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন,  ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আক্রান্ত সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কথা বলে এবং এলাকা ঘুরে মনে হয়, একাত্তরে যে ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছিল হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর এ যেন তারই আরেক রূপ। প্রচণ্ড হিংসা ও হেনস্তা করার মনোভাব নিয়ে মন্দির ভাঙা হয়েছে।’  নাসিরনগরে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকা পরিদর্শন ও আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলা শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে একথা বলেন।

সুলতানা কামাল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘মন্দিরগুলো যেভাবে ধ্বংস করেছে তাতে প্রচণ্ড হিংসার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে।  এখনও লোকালয়গুলোয় মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। ঠিক একাত্তরে যেমন দেখেছি।’

এ ধরনের নিপীড়ন বন্ধ না করা গেলে দেশত্যাগের সংখ্যা বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা বলতে শুরু করেছেন, এখানে তারা টিকতে পারবেন না। তাদের চলে যেতেই হবে। একটা জনগোষ্ঠীকে যদি এভাবে উৎখাত করা হয়, এর চেয়ে বড় অত্যাচার কী হতে পারে?’

সুলতানা কামাল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেন, ‘আমি এমন মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা বলছেন, পরিবারের নারীরা নদীর ওপারে পালিয়ে গিয়ে সারারাত কাটাতে বাধ্য হয়েছে, ঘরে ফিরতে পারেনি।’ প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেও যেখানে সভা সমাবেশ করতে পারি না, সেখানে প্রশাসক কী এমন বুঝলো যে, এ ধরনের একটা সভা করা অনুমতি দিয়ে দিলো?’

উল্লেখ্য, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য থেকে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের এক যুবক ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে। যে ছবিতে মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই যুবককে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে রবিবার ৩০ অক্টোবর সকাল থেকে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড় এবং খেলার মাঠে একাধিক ইসলামি দলের নেতারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ তিন থেকে ৪০০ লোক সংঘবদ্ধ হয়ে এ ঘটনার জন্য হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর চড়াও হয়। এ সময় পুরো উপজেলা সদরের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার এবং তাদের মন্দিরে বর্বরোচিত হামলা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, তাদের থামাতে পুলিশ, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। পরে রাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কাজল দত্ত এবং নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। এসব মামলায় অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এঘটনায় নাসিরনগর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে জেলা পুলিশ লাইনে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।

সুলতানা কামাল এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘কোথায় না কোথায় কী প্রকাশিত হলো, আর কী এমন ঘটলো যে, কোনও খোঁজ  না  নিয়েই এত বড় একটা হামলা ঘটিয়ে ফেললো? এ সময় এ ধরনের সভা করতে অনুমতি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

/ইউআই/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
কোরিওগ্রাফার ইভানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৩ মে
কোরিওগ্রাফার ইভানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৩ মে
শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা দুই বছরে দ্বিগুণ
শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা দুই বছরে দ্বিগুণ
টানা দ্বিতীয় জয়ের খোঁজে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ
টানা দ্বিতীয় জয়ের খোঁজে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি