বরগুনার বেতাগীতে শ্রেণিকক্ষে এক স্কুলশিক্ষিকা ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সুমন বিশ্বাস (৩৫)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্কুল শিক্ষিকার মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকালে বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) বিজয় বসাক বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার (২৩ আগস্ট) ভোর রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, ‘গ্রেফতারের পর সুমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শনিবার তাকেসহ সবাইকে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ডে পেলে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘এই ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে তিন জন এজাহারভুক্ত আসামি এবং আসামিদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অপরাধে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
পুলিশের সূত্র জানায়, গ্রেফতার সুমন বিশ্বাস বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের মৃত হিরণ বিশ্বাসের ছেলে। সে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কদমতলা এলাকার রেজাউল নামের এক তরুণের কাছ থেকে ওই শিক্ষিকার ব্যবহৃত মোবাইলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট বেতাগী উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে (৩০) শ্রেণিকক্ষে ধর্ষণ করা হয়। এসময় অন্য একটি কক্ষে তার স্বামীকে আটকে রাখা হয়। এই ঘটনায় শিক্ষিকা বাদী হয়ে বেতাগী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্থানীয় ছয় বখাটেকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলো, সুমন বিশ্বাস (৩৫), রাসেল (২৪), সুমন কাজী (৩০), মো. রবিউল (১৮), হাসান (২৫) ও মো. জুয়েল (৩০)। এদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে সুমন বিশ্বাস,সুমন কাজী, হাসান ও রবিউল। হাসান ও রবিউলকে তার বাবা নিজেই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত সন্তানদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে রাসেলের বাবা আব্দুল হাকিম ও সুমন কাজীর বাবা কুদ্দুস কাজীকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সুমন বিশ্বাস এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুই নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানের অনুসারী।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘এখনও গুরুত্বপূর্ণ এক আসামি পলাতক রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে চিকিৎসকের দেওয়া প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। এটি মামলার একটি দালিলিক প্রমাণ। সবকিছুই আমলে নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই মিয়ানমার থেকে অবাধে আসছে পশু