X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১
তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ১০

‘মাস্টারকার্ড ডিভাইসে’র মাধ্যমে এইচএসসিতেও প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৪৭আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৫০

‘সরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার কায়দায় চলমান এইচএসসি পরীক্ষাতেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে চেয়েছিল জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা। তারা বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতি করতো মাস্টারকার্ড ডিভাইসের মাধ্যমে। সেভাবেই এইচএসসি পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করার চেষ্টা করায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিন জন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার লোক রয়েছে।’

উদ্ধার করা জালিয়াতির সরঞ্জাম শনিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবুদল বাতেন এসব কথা জানান। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুর, নিউমার্কেট ও ফার্মগেট এলাকা থেকে একটি প্রভাবশালী এ প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে আটক করেছিল পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত ১০ জনের মধ্যে তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তা হলো- হবিগঞ্জের পূবালী ব্যাংকের প্রবেশনাল অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম, পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংকের আইটি অফিসার অসীম কুমার দাস ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রবেশনাল অফিসার সোহেল আকন্দ। এছাড়া জহিরুল ইসলাম, সাদদাদুর রহমান সোহান, নাদিমুল ইসলাম, এনামুল হক শিশির, শেখ তারিকুজ্জামান, অর্ণব চক্রবর্তী ও আরিফুর রহমান শাহীনকেও গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৩টি বিশেষ ধরনের ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। এটি প্রতারকদের কাছে ‘মাস্টারকার্ড ডিভাইস’ নাম পরিচিত।

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ গ্রেফতার ১০ প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রক্রিয়া সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ‘এখানে দুটি ডিভাইস একজন ব্যাক্তির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। একটি খুবই ক্ষুদ্র ডিভাইস কানে, আরেকটি শরীরে লুকানো থাকে। যা অনেকট মাস্টার কার্ডের মতো। এই ডিভাইস দিয়ে পরীক্ষার্থী বাইরে থাকা প্রতারক চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এতে কল করা না গেলেও কল এলে সেটা অটো রিসিভ হয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বাইরে থেকে প্রশ্নের সমাধান ফোনে বলে দেওয়া হয়। যা শুনে পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রে লেখেন। বিশেষ করে এমসিকিউ অংশের প্রশ্ন সমাধানের জন্য এই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকে।’

তিনি আরও জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত থাকলেও প্রতি শুক্রবার ঢাকায় এসে মিলিত হয়। পান্থপথে তাদের একটি ওয়ানস্টপ সেন্টার রয়েছে। যেখানে থেকে কেন্দ্রে থাকা পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ, প্রশ্নপত্রের সমাধান ও উত্তর পাঠানোর কাজগুলো করা হয়। দীর্ঘদিন তারা বিভিন্ন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জালিয়াতি করে এলেও এবার এইচএসসি পরীক্ষার এই ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা করেছিল। তারা সফল হওয়ার আগেই গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিন ব্যাংক কর্মকর্তা জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছে। তাদের দ্বারা আরও অনেকেই সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে। পুলকেশ দাস বাচ্চু এই চক্রের মূল হোতা। তার বিশ্বস্ত সহযোগী কার্জনের সহযোগিতায় এই বিশেষ ডিভাইস সংগ্রহ করা হয়। অন্য সদস্যরা পরীক্ষার্থী সংগ্রহ, তাদের সঙ্গে চুক্তির কাজ করে।

গত ৭/৮ বছর তারা এ অপরাধ করছিল। সর্বনিম্ন ৩০/৩৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্ব্বোচ ১০/১২ লাখ টাকা চুক্তিতে কাজ করতো এ চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালতে তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে। এরপর আরও বিস্তারিত জানানো যাবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/আরজে/এমও/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা