X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

তাবিথের ৫ বছরে আয় বেড়েছে তিনগুণ

এমরান হোসাইন শেখ
০১ জানুয়ারি ২০২০, ২২:০৭আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:০৩

তাবিথ আওয়াল (ফাইল ছবি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি থেকে মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ৫ বছরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০টি। এ সময়ের মধ্যে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৭টি থেকে বেড়ে ৩৭টিতে দাঁড়িয়েছে। তার বার্ষিক আয়ও তিনগুণ বেড়ে ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। আগে তার কোনও গাড়ি না থাকলেও এবার একটি লেক্সাস গাড়ি থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মূল্য দেখানো হয়েছে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

মেয়র পদে এবার নির্বাচনের লক্ষ্যে হলফনামায় (২০১৯) দেওয়া তথ্য এবং ২০১৫ সালের নির্বাচনের সময় দেওয়া তথ্য তুলনামূলক পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া, তাবিথের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে অন্য সব প্রার্থীর চেয়ে বেশি। বর্তমানে তাবিথের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ ৮ হাজার ৩১৭ টাকা। ৫ বছর আগে এই সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫৩ টাকার। বর্তমানে তাবিথের স্ত্রীর রয়েছে দুই কোটি ৩০ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮৮ টাকার সম্পত্তি ও ষাট ভরি সোনা।

হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাবিথের বার্ষিক আয় ৪ কোটি ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯১ টাকা। ২০১৫ সালের হলফনামা মতে, তার আয় ছিল এক কোটি ৬০ লাখ ৩৮ হাজার ১৬৪ টাকা।

২০১৫ সালে দেওয়া হলফনামায় তাবিথ আউয়াল ১৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন। এখন তা থেকে আরও ২০টি বেড়ে বর্তমানে ৩৭টি দাঁড়িয়েছে।

এবারের হলফনামা ও গতবারের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগের বারের বাড়িভাড়া থেকে বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা। এবার বেড়ে তা ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা হয়েছে।

আগের ব্যবসার আয় ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬০ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৬ টাকা হয়েছে। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে আগে ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯ টাকা আয় ছিল। সেখানে বেড়ে ২২ লাখ ২৪ হাজার ৩৪২ টাকায় দাঁড়িয়েছে। পেশা থেকে আয় ছিল মাত্র এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। সেটা এখন কমে এক লাখ টাকায় এসেছে। অন্যদিকে, চাকরি থেকে কোনও আয়ই ছিল না। এ খাত থেকে এবার বছরে আয় তার ৬২ লাখ ৪ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে আগেরবার তার নিজের হাতে নগদ ছিল ৩০ লাখ ৭৪ হাজার ৮৬০ টাকা। আর তার স্ত্রীর ছিল এক লাখ ৮০ হাজার ৪৪৪ টাকা। এবার তার হাতে নগদ আছে এক কোটি ৪৮ লাখ ৫১ হাজার ৫৮ টাকা। অন্যদিকে স্ত্রীর আছে নগদ ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ১০৬ টাকা।

তাবিথের ব্যাংকে জমা আগের বারের ৩৪ লাখ ২৮ হাজার ৩৩১ টাকা থেকে বেড়ে ৪১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৯৫ টাকা হয়েছে। আর স্ত্রীর ২৭ লাখ ১১ হাজার ৩০৬ টাকা থেকে বেড়ে ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ২১১ টাকা হয়েছে।

স্টক এককচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির শেয়ার ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৩ টাকা। এটি আগে ছিল ১৪ কোটি ৮১ লাখ ৩২ হাজার ২৯৬ টাকা। এ খাতে আগের বার তার স্ত্রীর ছিল ৫৫ হাজার ৭৭০ টাকা। এবার তা বেড়ে ৪১ লাখ ৫০ হাজার ২১৯ টাকা হয়েছে। অবশ্য আগের বার কোম্পানির শেয়ারে নির্ভরশীলের নামে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখানো হলেও এবার এ খাতে কিছু দেখানো হয়নি। আগের বার তাবিথ আউয়ালের কোনও গাড়ি না থাকলেও এবার ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি লেক্সাস জিপ আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তাবিথ আউয়ালের নিজের নামে রয়েছে ২৪ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৪ টাকা মূল্যের সোনা। আর স্ত্রীর রয়েছে ৬০ ভরি সোনা। আগেরবার দুই জনের একই পরিমাণ সোনা ছিল। তাবিথের ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র উভয় ক্ষেত্রে আগের বারের মতো এবারও পাঁচ লাখ করে রয়েছে। তবে, স্ত্রীর আগেরবার এ খাতে কোনও সম্পদ না থাকলেও এবার তার ইলেকট্রনিক সামগ্রী খাতে দুই লাখ ৭৫ হাজার ২০০ ও আসবাবপত্র বাবদ ২৫ হাজার টাকার সম্পত্তি দেখানো হয়েছে।

আগেরবার অন্যান্য খাতে তাবিথের সম্পদ ছিল ১৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪৪২ টাকার। এবার তা সামান্য বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৭ টাকা। এ খাতে তার স্ত্রীর আগে ৬০ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৬৯৯ টাকা হয়েছে।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আগেরবার তার কৃষি জমি ছিল ২ দশমিক ৩৩৫ একর। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ২৪০০ একর। আগেরবার তার অকৃষিজমি ছিল ১৫ দশমিক ৭৯০৭ একর। এবার ১৬ দশমিক ৪৮০৭ একর। আগের বার তার বাড়ি/ফ্ল্যাটের বিষয় কিছু উল্লেখ না থাকলেও এখানে ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০ টাকার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এবার তার যথাক্রমে ৯২৪ বর্গফুট ও ১০৪৩ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাটের কথা বলা আছে।

আগের বার চা/রাবার বাগান, মৎস্য ও গবাদি পশুর খামার না থাকলেও এবার এখাতে শূন্য দশমিক ৫৬ একর জমি ও ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৬ টাকার সম্পদ এবং এ খাতে যৌথ মালিকায় ফেনীতে ৫ একরের একটি দিঘি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আগেরবার তাবিথের ঋণ ছিল এক কোটি ২৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৯ টাকা। এবার তা বেড়ে দুই কোটি ৮৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৪২ টাকা হয়েছে।

যৌথ ব্যবসায় কোম্পানির চেয়ারম্যান বা পরিচালক সদস্য হিসেবে তাবিথ আউয়ালের ঋণ রয়েছে ৩০২ কোটি ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অবশ্যই, এর মধ্যে ৩৮ লাখ ১১ হাজার টাকার গাড়ি লোনও রয়েছে। এ খাতে আগেরবার তার লোন ছিল ১৭৮ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন:
সোয়া শ’ কোটি টাকার মালিক তাপস, ইশরাকের সাড়ে ৫ কোটি
সম্পদ কমেছে আতিকের, বেড়েছে স্ত্রীর
মেয়র প্রার্থী আয়াতুল্লাহর আয় নেই

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
ফটোকপি দোকানের কর্মচারী, জেলে, রাজমিস্ত্রি তৈরি করতো জাল টাকা
রাজধানীকে সুন্দর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি: আইইবি
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো যুবকের
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা