X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

চমেক চিকিৎসকরা আইসোলেশনে গেলে অনুপস্থিত, পাবেন না সুরক্ষা সামগ্রী

জাকিয়া আহমেদ ও হুমায়ুন মাসুদ
৩০ মে ২০২০, ২৩:৫২আপডেট : ৩১ মে ২০২০, ০২:৩৪

চমেক চিকিৎসকরা আইসোলেশনে গেলে অনুপস্থিত, পাবেন না সুরক্ষা সামগ্রী করোনা রোগীর সংস্পর্শে এলেও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা আইসোলেশনে যেতে পারবেন না। যদি চমেক সংশ্লিষ্ট কোনও ব্যক্তি রোগীর সংস্পর্শে এসে আইসোলেশনে যান তবে তিনি অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হবেন। একইসঙ্গে সুরক্ষা সামগ্রী পাবেন না বলেও জানানো হয়। শনিবার (৩০ মে) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চমেকে কর্মরত ব্যক্তির আবাসন, বাড়ি বা ফ্লাট লকডাউন হলেও সেই আওতার বাইরে এসে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে হবে। নোটিশটির তৃতীয় দফায় বলা হয় চমেক থেকে চিকিৎসকদের জন্য কোনও সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের সুযোগ নেই।

যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইসোলেশন, পিপিই বিষয়ক একটি নির্দিষ্ট পলিসি অনুসরণের নির্দেশনা দিয়ে আসছে, সেখানে চমেক কেন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ শামীম হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ আমাদের একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে গৃহীত খণ্ড খণ্ড সিদ্ধান্তগুলোকেই পরবর্তীকালে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। নির্দেশনাটি লেখার সময় কিছু ভুল হয়ে গেছে, একটু কড়া ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, এগুলো সংশোধন করে নির্দেশনাটি আবার দেওয়া হবে।

নির্দেশনায় যেসব বিষয়ে সংশোধনী আনবেন সেসব বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথম দফায় হবে চমেকের যেসব চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোভিড-১৯ পজিটিভ হবেন তারা চিকিৎসা নিয়ে ১০ দিন পরে যদি সুস্থ হন তখন কাজে যোগ দান করবেন। দ্বিতীয় দফায় হবে, যেসব চিকিৎসক পিপিই পরে রোগী দেখছেন, তারা করোনা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে গেলে আইসোলেশনে না গিয়ে পরের দিনও রোগী দেখবেন। কারণ কোভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে আসা মানেই আক্রান্ত হওয়া না। সংস্পর্শে এলেই যদি আইসোলেশন এ চলে যান তাহলে চিকিৎসা চলবে কিভাবে। তৃতীয় দফায় আমরা বলতে চেয়েছি যদি কোনও চিকিৎসকের বাসা বাসা লকডাউনের আওতায় পড়লেও তাকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে।

চতুর্থ দফা নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়। মেডিক্যাল কলেজ চিকিৎসকরা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করে থাকে, এক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষের চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, নিরবিচ্ছিন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগতভাবে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু অভ্যন্তরীণ একটা চক্র আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। মিটিংয়ে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত রূঢ় ভাষায় লিখে এবং সেটি ফেসবুক এ ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে বিতর্কিত করা হচ্ছে।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং কোভিড -১৯ বিষয়ক মিডিয়া সেলের প্রধান মো. হাবিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমিও এরকম একটা অর্ডারের কথা শুনেছি, আমি এখনও দেখিনি। কাল দেখবো। কারোরই পুরোপুরি অথোরিটি নাই কঠিন কোনও আদেশ করার।

তিনি বলেন, ‘যেকোনও আদেশই সেন্ট্রাল আদেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে করতে হবে। কোনও একটা কর্নার থেকে যদি নিজ উদ্যোগে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়…। করোনার আইসোলেশনের ক্ষেত্রে আমরা একধরনের পলিসি ফলো করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটা বিষয় হতে পারে, ওদিকে সংক্রমণ বাড়ছে বলে এমন কঠিন আদেশে গেলো কীনা...।’

কিন্তু সংক্রমণ বাড়লেতো চিকিৎসকরা নিজেরা সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসা দেবে না, আর এটাতো সরকারি আদেশ, কোভিড হাসপাতালগুলোতে সেবা দেওয়ার পর চিকিৎসকরা আইসোলেশনে থাকবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, অন্য কারও সঙ্গে আলোচনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা। তবে সেন্ট্রালের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এমন কোনও আদেশ আদেশ জারি করলে তাকে অনুরোধ করবো সেটি প্রত্যাহার করতে।

এদিকে এই আদেশকে ‘অবাক আদেশ’ মন্তব্য করে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন এবং আমাদের সরকারের নির্দেশনা সবকিছুর সঙ্গে এটা অসঙ্গতিপূর্ণ তিনি এগুলো কোথায় পেলেন সেটা নিয়ে আগামীকাল তার সঙ্গে কথা হবে।

উল্লেখ্য, করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় বলা আছে- করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া চিকিৎসক-নার্সরা প্রতিদিন হাসপাতাল থেকে বাসায় যেতে পারবেন না। তারা একনাগাড়ে সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ দিন পর্যন্ত কাজ করে পরের ১৪ দিন তাদের জন্য নির্ধারণ করা হোটেলে থাকবেন। পরের দিনগুলো বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকবেন। এদের মধ্যে যদি কেউ করোনা সংক্রমিত হন, তাহলে তার চিকিৎসা চলবে, বাকিরা রোস্টার অনুযায়ী পুনরায় কাজে যোগ দেবেন।

/এফএএন/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক