মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পুরনো কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন নতুন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি মনে করেন, ‘আগের কার্যক্রম ছিল লোকদেখানো। শুধু ফাঁকি আর ফাঁকি। যেমন ধোঁয়ায় ফাঁকি, তেমনই মশার ওষুধে ফাঁকি, তেমনই কর্মে ফাঁকি। এ কারণে জনগণ এসবের সুবিধা পেতো না। এখন থেকে আর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।’ রবিবার (১৪ জুন) সকালে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন সিপাহীবাগ ঝিল ও রমনা পার্কে মাছ ও হাঁস চাষের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পুরনো আর বর্তমান কার্যক্রমের তফাত তুলে ধরে ডিএসসিসি মেয়র জানান, ‘আগে সকাল ৮টা থেকে একঘণ্টা লার্ভা নিধনে ওষুধ ছিটানো হতো। এখন সেটি চার ঘণ্টা করা হচ্ছে। আগে মাগরিবের দিকে একঘণ্টা ধোয়া দেওয়া হতো, এখন তা দুপুর আড়াইটা থেকে চার ঘণ্টা দেওয়া হচ্ছে।’
মেয়রের কথায়, ‘ঢাকা শহরে এত দখল হওয়ার পরেও এখনও যত জলাশয় ও উন্মুক্ত স্থান আছে তা জানলে আপনারা অবাক হবেন। আমি নিজেই হতভম্ব হয়েছি। খিলগাঁওয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৩ বিঘার একটি জলাশয় পেয়েছি। এটি সরকার থেকে গণপূর্ত বিভাগ নিয়েছিল। আমরা এই জলাশয় পরিষ্কার করছি, পাশাপাশি এখানে বিশেষ একটি প্রকল্প নিয়ে নান্দনিক পার্ক গড়বো। আমরা আর কোনও দখল হতে দেবো না। আমাদের কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ না করা পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না।’
সিপাহীবাগ ঝিলে তেলাপিয়া মাছ ও হাঁস চাষ করবে ডিএসসিসি। কারণ তেলাপিয়া মাছ মশার লার্ভা ধ্বংস করে। এলাকা ভিত্তিক তরুণ সংগঠনকে হাঁস ও মাছ দেখভাল করার অনুরোধ জানিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র।
তাপসের দাবি, ‘আমরা যেখানেই হাত দেবো নতুনভাবে কিছু চিন্তা করবো। আগামী রবিবার (২১ জুন) থেকে ঢাকা দক্ষিণের সব নর্দমা পরিষ্কার করবো। এভাবে বছরব্যাপী কার্যক্রম শুরু করেছি। আগের গতানুগতিক কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে এসেছি। আগে মশার প্রকোপ বাড়লেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হতো। এখন তা বছরব্যাপী করা হবে। সারাবছরের মূল ওষুধ আমদানি করেছি। আমরা আশাবাদী, এ বছর থেকে ঢাকাবাসীকে আর মশার প্রকোপে পড়তে হবে না।
মেয়র উল্লেখ করেন, মশার অ্যাডাল্টিসাইডিং ওষুধে কিছু ঘাটতি থাকায় উত্তর সিটি থেকে ধার নিতে হচ্ছে। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ‘আমাদের কোনও ধরনের ঘাটতি থাকবে না। নতুন যন্ত্র আনা হচ্ছে। বছরব্যাপী কার্যক্রমের জন্য ওষুধের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মশক নিধনের জন্য পর্যাপ্ত জনবল দেওয়া হয়েছে। আমরা ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গুমুক্ত নগরী উপহার দিতে পারবো।’
করোনাভাইরাস মহামারি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘যেসব এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি সেগুলো চিহ্নিত করে লকডাউনের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। আমরাও নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করবো। আমি সবাইকে বলবো, নিরাপদ থাকতে হবে। নিজেদের আরও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। জীবিকা অর্জন করতে হবে। সারাবিশ্ব আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশও খুলে দেওয়া হয়েছে। আগে কিন্তু জীবন, জীবন থাকলে জীবিকা হবে।’
ছবি: শাহেদ শফিক