X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জবাবদিহির অভাবে বন অধিদফতরে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে: টিআইবি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:২১আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:২১

টিআইবি পুরোনো বন আইন, সনাতন পদ্ধতিতে বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাসহ কার্যকর তদারকি ও জবাবদিহির অভাবে বন অধিদফতরে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এসব সমস্যা উত্তরণে সংস্থাটি ১৫ দফা সুপারিশ দিয়েছে সংস্থাটি। ‘বন অধিদফতর: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেছে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারিত না হওয়া এবং এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি বিদ্যমান। বন অধিদফতরের সকল স্তরের কার্যালয়ের কর্মকাণ্ডে কার্যকর তদারকি, পরিবীক্ষণ, জবাবদিহিতা ও ফরেস্ট্রি পারফরমেন্স অডিট-এর অনুপস্থিতিতে বন অধিদফতর কেন্দ্রিক দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে।
এছাড়া, ৯৩ বছরের পুরোনো বন আইন (১৯২৭)- এর কার্যকর প্রয়োগে প্রয়োজনীয় বিধিমালা ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও আমূল সংস্কারের জন্য কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। অধিদফতরের কর্মকাণ্ডে বননির্ভর আদিবাসীদের প্রথাগত ভূমি অধিকার সুরক্ষাবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়। বননির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রথাগত ভূমি অধিকার হরণ, বন আইন লঙ্ঘন করে ও একতরফাভাবে সংরক্ষিত বন, বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান ঘোষণাসহ জবরদখল উচ্ছেদের নামে অধিদফতরের বৈষম্যমূলকভাবে ক্ষমতা চর্চার সাম্প্রতিক উদাহরণ রয়েছে। সংরক্ষিত বন ও এর আশেপাশে বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, ত্রুটিপূর্ণ সামাজিক ও পরিবেশ সমীক্ষা সম্পাদন এবং এসবের উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনুমোদনের ঘটনায় অধিদফতরের ওপর অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যর্থতাও প্রত্যক্ষ করা যায়। তাছাড়া বন জবরদখল রোধ, বনভূমির জমি সেনানিবাস ও সামরিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ এবং প্রাকৃতিক বনের স্থায়ী ক্ষতি রোধে বন অধিদফতরের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়।
বন অধিদফতরের কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রাধিকারমূলক বরাদ্দ, অবকাঠামো ও লজিস্টিকস-এর ঘাটতি এবং এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব লক্ষ করা যায়। অধিদফতরের কর্মকাণ্ডসহ রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, বন সংরক্ষণ ও বনায়নকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির বিস্তার এবং তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি বিদ্যমান বলে মনে করে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান এবং গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক মু. জাকির হোসেন খান, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার-জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রেযাউল করিম ও জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নেওয়াজুল মওলা।
বন সুরক্ষা করার যে অর্পিত দায়িত্ব সেক্ষেত্রে বন অধিদফতর ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বন অধিদফতরের যে চিত্রটি আমরা দেখলাম, তা সত্যিকার অর্থেই খুব হতাশাব্যঞ্জক। সরকারি বনভূমির সুরক্ষা ও বনে বসবাসকারী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত জমির যে অধিকার তা নিশ্চিত করতে বন অধিদফতরের ওপর অর্পিত যে ক্ষমতা এবং সক্ষমতা রয়েছে, দুটোরই তারা কার্যকর ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার করতে পারছে না। সেখানে অনেক বিচ্যুতি আমরা লক্ষ করেছি। গণমাধ্যমে এ জাতীয় বেশকিছু ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে, যার দৃষ্টান্ত আমরা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছি। আমাদের গবেষণায়ও সেটা প্রতীয়মান হয়েছে। আমরা দেখলাম যে বেসামরিক ও সামরিক স্থাপনা নির্মাণে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি যেভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং জবরদখলের যে-সব ঘটনা ঘটে, তা প্রতিরোধেও বন অধিদফতর কার্যকর কোনও উদ্যোগ নিতে পারেনি। অনেক সময় তারা পর্যাপ্তমাত্রায় সক্রিয় না হয়ে এড়িয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এ ধরনের জবরদখল এবং আত্মসাতের সাথে যোগসাজশের দৃষ্টান্তও রয়েছে। এক্ষেত্রে বন উজাড়, বনভূমি বেদখল ও অবৈধভাবে বনভূমি বরাদ্দ কিংবা তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের একাংশের মাধ্যমে যোগসাজশের একধরনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটেছে। যেখানে বাস্তবে রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে।’

/জেইউ/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার