X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে আনার চেষ্টা করছেন বিএনপি নেতারা

আদিত্য রিমন
১৭ মার্চ ২০১৯, ২১:২৬আপডেট : ১৮ মার্চ ২০১৯, ০৩:২৬





বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ছবি: রয়টার্স) চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) না আসার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি চাইছেন, তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের অধীনে বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে চিকিৎসা নিতে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জেল কোড অনুযায়ী তাকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতেই ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন বিএনপির নেতারা। দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তার মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেন। তখন তাকে বিএসএমএমইউতেই ভর্তি হওয়ার অনুরোধও করেন তারা।
বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, খালেদা জিয়াকে বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অনেকবার সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দুই বার দেখা করে অনুরোধও করা হয়েছে। এমনকি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যয় বহন করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তবে জেল কোডের কথা বলে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দিতে অনড় সরকার। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিতে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। তবে তিনি বিএসএমএমইউতে আসবেন কি আসবেন না, এ ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তারা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোজঁখবর নেন এবং রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এ আলোচনার বড় একটা অংশ ছিল বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারটি। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বিএসএমইউতে আসার বিষয়ে পরিষ্কার কোনও বক্তব্য পাননি এই নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করি। এবারও সেই রকম দেখা করতে গিয়েছি। তার স্বাস্থ্যের খোজঁখবর নিয়েছি। ম্যাডামের শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। কারাগারে তার কোনও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হচ্ছে না। তার জরুরি চিকিৎসা দরকার।’
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বেগম জিয়া বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিতে আসার ব্যাপারে সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু বলেননি। আমরা এখন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দাবি থেকে সরে আসিনি। এখন সরকার কী ব্যবস্থা নেয় তা দেখতে হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নেতারা তার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। তবে সরাসরি কিছু বলেননি।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে খালেদা জিয়ার স্বজনরা দেখা করার অনুমতি পেলে তাদের মাধ্যমেও অনুরোধ করা হবে, তিনি যেন চিকিৎসা নিতে বিএসএমএমইউতে আসেন।’
এর আগে দুই বার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে আনা হয়। প্রথমবার গত বছরের ৭ এপ্রিল। সেদিন তিন ঘণ্টার মতো হাসপাতালে ছিলেন তিনি। সেসময় তার কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়। এরপর গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। তখন ১৭ দিন তিনি হাসপাতালে থাকেন।
বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, বিএসএমএমইউতে ভর্তি থাকার সময় চিকিৎসা শেষ না করে অনেকটা তড়িঘড়ি খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার চিকিৎসার জন্য আদালতের নির্দেশ গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়। তখন আবারও তার শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএনপির প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ মার্চ খালেদা জিয়াকে আবার বিএসএমএমইউতে আনতে চাইলে তিনি আসেনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিতে চাইলে সেটাও তার ব্যাপার। আর তিনি যদি না আসতে চান সেটাও তার ব্যাপার। তার মতের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেগম জিয়া বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান। আর সরকারের পক্ষ থেকে বার বার জেল কোডের কথা বলে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এখন পরবর্তীতে আমরা অন্য কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপনাদের জানাবেন।’ 

/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
ঢাকার কোথাও হালকা বৃষ্টি, কোথাও ঠান্ডা ঝোড়ো হাওয়া
ঢাকার কোথাও হালকা বৃষ্টি, কোথাও ঠান্ডা ঝোড়ো হাওয়া
সূর্যকুমারের ছক্কায় সেঞ্চুরি ও মুম্বাইয়ের জয়
সূর্যকুমারের ছক্কায় সেঞ্চুরি ও মুম্বাইয়ের জয়
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস