সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সে দিনের হত্যায় বেশ কিছু অঙ্ক ছিল, তার মধ্যে অন্যতম অঙ্ক ছিল বাঙালিকে অভিভাবক শূন্য করা।
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারির সামনে বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভা ও শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের পুরস্কার বিতরণী’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমি অনেককে জানি যারা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর কারণে তাদের ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেয় না। এই কথাটি বললাম, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশের ধরন তুলে ধরতে। আমরা জানি আমাদের বাঙালির পরম আরাধ্য ধন বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। আমরা জানি বিষাদ সিন্ধুতে মীর মোশাররফ হোসেন কারবালার কাহিনি তুলে ধরেছেন। কিন্তু কত বিষাদ সিন্ধু এক হলে একটি ১৫ আগস্ট সংগঠিত হওয়া সম্ভব। বিষাদ সিন্ধুতে কিছু সময়ের জন্য শিশুদেরকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৫ আগস্টে সে দিন শিশু রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের মাঝে ন্যূনতম মানবিকতা ছিল না। তারা গৃহপরিচারিকাকেও খুন করেছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতি ছিল- আমি তোমাকে ভালোবাসতে চাই, তুমি ভালোবাসার যোগ্য হও। আমি তোমাকে শ্রদ্ধা করতে চাই, তুমি শ্রদ্ধার যোগ্য হও। তার মাঝে এক অমায়িক মেধা ও শ্রদ্ধাবোধ নীতির সংমিশ্রণ ছিল। আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে যে পতাকা রয়েছে তা সব সময় সমুন্নত রাখি।
এ সময় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চারু শিল্পী সংসদের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিনসহ অনেকে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেন আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে না পারি। তারা মিলিটারি স্বৈরাচারী সরকার দিয়ে আমাদের দেশকে পেছনে টেনে নিয়ে গেছে। আমরা দেখেছি ২১ বছর ধরে কীভাবে দেশকে পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে জায়গা থেকে বর্তমান সরকার টানা তিনবার দেশ পরিচালনা করছে, এর মাধ্যমে দেশকে সামনে ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান শিক্ষায় বাস্তবায়নে ও বৃদ্ধিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জনগণকে রায় দিয়ে এই সরকারকে আবারও ক্ষমতায় বসাতে হবে। আমি সকলের প্রতি সেই আহ্বান জানাই।
এ সময় তিনি উপস্থিত অভিভাবকদের প্রতি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও সকল প্রতিযোগিদের বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।