গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আওয়ামী লীগের খুব মন খারাপ। ওবায়দুল কাদের সাহেবের মুখ খুব শুকনো। কারণটা কী? ভেবেছিল নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করার পরে দলে দলে লোকজন নির্বাচনে যুক্ত হবে। বিরোধী শিবির থেকে অসংখ্য দল ও লোককে তারা নির্বাচনের খেলায় যুক্ত করতে পারবে। কিন্তু দুই একটি নীতিভ্রষ্ট লোক, রাজনৈতিক আবর্জনা ছাড়া সরকারি ষড়যন্ত্রে কেউ পা দেয় নাই। সরকারের এই নির্বাচন নির্বাচন খেলায় কেউ তাদের নাম যুক্ত করেনি।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) অবরোধের পক্ষে মিছিল শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, আগামী ৭ তারিখে (৭ জানুয়ারি) দেশে একটা নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। কিন্তু দেশে কী নির্বাচন করার কোনও পরিবেশ আছে? কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করার অবস্থা আছে? যারা রাজনৈতিকভাবে এতিম, যারা আবর্জনায় পরিণত হয়েছে, এরকম কিছু জঙ্গল-আবর্জনাকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের কাতারে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। মানুষ এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি, মানুষ এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই নির্বাচনকে বর্জন করার মনোভাব নিয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীকালকের মধ্যে নাকি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, নির্বাচন কমিশনকে এত কষ্ট করার দরকার কী? প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন, আওয়ামী লীগকে দায়িত্ব দেন। আগামী ৭ তারিখ (৭ জানুয়ারি) কোন ৩০০ জনকে আপনারা নির্বাচিত ঘোষণা করবেন, সেই তালিকাটা আপনারা আগামীকালকের মধ্যে শেষ করে ফেলতে পারেন। নির্বাচন করতে নাকি নির্বাচন কমিশনকে ১৬০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। এই টাকা কেন খরচ করবেন? এই টাকা দেশের সম্পদ, জনগণের ট্যাক্সের টাকা। সাজানো নীলনকশার নির্বাচন করতে ১৬০০ কোটি টাকা জাতীয় অপচয় আমরা মেনে নেবো না। এর জন্য বলতে চাই, খরচ বন্ধ করেন। এই টাকা খরচ করা মানে বাস্তবে এই টাকাটা নষ্ট করা। সেজন্য নির্বাচন নির্বাচন খেলাটা বন্ধ করেন।
তিনি আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন নির্বাচনের ট্রেন নাকি আর থামবে না। ট্রেন লাইনই তো নাই। সুতরাং এই ট্রেন লাইন নদীতে পড়বে না সাগরে পড়বে সেটাই আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে, গণতন্ত্র নিয়ে, নির্বাচনের সুযোগ নিয়ে যে নয়-ছয় করছেন, সেটা বাংলাদেশের মানুষ আর বরদাস্ত করবে না।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ বিষয়ক সমন্বয়ক দিদারুল ভুঁইয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আবু ইউসুফ সেলিম প্রমুখ।