X
সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চীনকে এ অঞ্চলের স্বাধীনতাকামীদের পাশে দাঁড়াতে হবে: ডা. জাফরুল্লাহ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:৩২আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:৩৪

 

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কাশ্মির মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের অবসান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘চীনকে কাশ্মিরিদের পাশে দাঁড়াতে হবে, ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। একইভাবে উলফা, মনিপুরি, অরুণাচল থেকে মেঘালয় পর্যন্ত যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে, তাদের পাশেও দাঁড়াতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে চীনের প্রেসিডেন্ট শিজিনপিং-এর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কেও ৪ দশক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘চীনকে ১৯৭১ সালের মতো ভুল করলে চলবে না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা পৃথিবীর অমঙ্গল বয়ে আনবে। মানুষের প্রাণহানিহবে। ভারতের আধিপত্যবাদ আরও বাড়বে।’ তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান দেখতে পেয়েছিলেন ভারতের আধিপত্যবাদী চেহারা, দেখেছিলেন রক্ষীবাহিনীর চেহারা। এজন্য তিনি ৭২ সালের সংবিধানে একটি ধারা সংযোজন করেছিলেন, পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে স্বাধীনতাকামীদের আমরা (বাংলাদেশ) সমর্থন দেব। তাই যদি দিতে হয় তাহলে আমাদের দরজা উলফার জন্য খুলে দিতে হবে। আমাদের দরজা মনিপুর ও মেঘালয়বাসীদের জন্য খুলে দিতে হবে। ঠিক যেভাবে খোলা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও উলফার ট্রেনিং বাংলাদেশে অব্যাহত ছিল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের আমলেও উলফার ট্রেনিং অব্যাহত ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়ার আমল থেকে ভারতীয়রা এটি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের কণ্ঠ রোধ করছে।’

ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ভারত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু, ভুলে গেলে চলবে না, তাদের দুর্যোগ অব্যবস্থাপনার কারণে এর ১০ লাখ লোক মারা গিয়েছিল। তাদের তালিকা আজ পর্যন্ত ভারত আমাদের কাছে স্থানান্তর করেনি। রেডক্রসকে সে তালিকা দেয়নি। অনেকে যে ৩০ লাখ ৩০ লাখ (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ) বলছেন, তার মূল কোথায়? সেটা আড়াল করতে ভারতীয় প্রচারণায় মুক্তিযুদ্ধে সেই শহীদদের নাম লিপিবদ্ধ করতে দিতে আগ্রহী নয়। ৩০ লাখশহীদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলে তাদের স্বজনরা বলতে পারবে আমার বাবা, আমার দাদা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু এটা করতে সরকার উৎসাহিত নয়। অথচ তারা ৩০ লাখশহীদ (সংখ্যা) নিয়ে খেলছে। এর মূল কারণ এটা ভারতীয় চক্রান্ত। ভারত জানে, শহীদদের তালিকা করলে ভারতের শরণার্থী শিবিরে যে ১০ লাখ বাংলাদেশি মারা গিয়েছিল, সেটা সামনে চলে আসবে।’

মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক বলেন, ‘মানুষ সমাজে বটগাছের আশ্রয় খোঁজে, পাখিও খোঁজে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। সামাজিক, সাংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু প্রয়োজন। চীন আমাদের সেই পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি চীনকে পরীক্ষিত বন্ধু মনে করে। তার সফর বাংলাদেশে ররাজনীতিতে দীর্ঘ প্রভাববিস্তার করবে।’

সভাপতির বক্তব্যে জেবেল রহমান গানি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাংলদেশের যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে, চীন প্রেসিডেন্টের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সেই সম্পর্ক জোরালো করতে ভূমিকা রাখবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে এক মাত্র চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলেই উপকৃত হবে। নইলে অন্য যেকোনও দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বর্তমানে যেভাবে আগ্রাসনের শিকার হয়েছে, সেভাবে আগ্রাসনের শিকার হবে। চীনের দায়িত্ব মানবতার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশকে আগ্রাসির জিঞ্জির হতে রক্ষা করা।’ 

চীনা প্রেসিডেন্টের আসন্ন বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্ক আরও বেশি শক্তিশালী করবে আশা প্রকাশ করে জেবেল রহমান গানি বলেন, আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, কাশ্মির ও রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধান ছাড়া জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়।’

সভায় মূল বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বলেন, ‘মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী ও চীনের  মাও সেতুংয়ের ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে চীনের সঙ্গে যে সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে,  তা আরও শক্তিশালী করতে হবে।’ 
বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি’র সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জাতীয় দল চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, ন্যাপ প্রেসিডিয়াম সদস্য সাদ্দাম হোসেন, ব্যারিস্টার মশিউর রহমান গাণি প্রমুখ।

/এসটিএস/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাজ্যের এমপি হতে লেবারের হয়ে লড়বেন আরেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি
যুক্তরাজ্যের এমপি হতে লেবারের হয়ে লড়বেন আরেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি
ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চট্টগ্রামের ১২ হাজার মানুষ
ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চট্টগ্রামের ১২ হাজার মানুষ
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও অভিযোগ দুদকে
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও অভিযোগ দুদকে
লক্ষ্মীপুর উপকূলের ২০ গ্রাম প্লাবিত
লক্ষ্মীপুর উপকূলের ২০ গ্রাম প্লাবিত
সর্বাধিক পঠিত
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেলো সুন্দরবন
জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেলো সুন্দরবন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
কখন উপকূল অতিক্রম করতে পারে ‘রিমাল’?
কখন উপকূল অতিক্রম করতে পারে ‘রিমাল’?
ধানমন্ডিতে হকারদের সড়ক অবরোধ
ধানমন্ডিতে হকারদের সড়ক অবরোধ