X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
মান্নার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক

যৌথভাবে আন্দোলন শুরুর আশা বিএনপি-নাগরিক ঐক্যের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৪ মে ২০২২, ২২:০২আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ২২:০৬

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারবিরোধী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে নাগরিক ঐক্যের কার্যকর আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি যৌথভাবে আন্দোলনের সূচনা করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি মাহমুদুর রহমান মান্নাও আলোচনাকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকালে রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব ও মাহমুদুর রহমান মান্না এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেষ হয়।

বৈঠকসূত্র জানায়, মির্জা ফখরুল ও তার সঙ্গে থাকা বিএনপি নেতা আবদুস সালাম ও জহির উদ্দিন স্বপনকে নিয়ে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন। শুরুতেই ভূমিকা বক্তব্য দেন মাহমুদুর রহমান মান্না। এরপর পুরো প্রক্রিয়াটি তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সেখানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সর্বদলীয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা, সরকারের পতন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সেই সরকারের সময়সীমা, রাষ্ট্রের সংস্কারসহ নানা বিষয়ে আলোকপাত করেন।

ফখরুলের বক্তব্যের পর মাহমুদুর রহমান মান্নাও দলের ও নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তাদের আলোচনার ফাঁকে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, জহির উদ্দিন স্বপন, নাগরিক ঐক্যের নেতা এস এম আকরাম, ডা. জাহেদ উর রহমানও টুকটাক কথা বলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, আলোচনায় বিএনপি নেতারা আন্তরিক ছিলেন। প্রাথমিকভাবে সবগুলো দলের সঙ্গে আলোচনা সেরে পরের ধাপে আলোচনা হবে। আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে জানিয়ে বৈঠকে মির্জা ফখরুল আগামী দিনে প্রক্রিয়াটিকে আরও অর্থবহ ও বিস্তারিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরের বৈঠকগুলোতে ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ ও রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আলোচনার প্রথম পর্ব শেষ করবে বিএনপি, এমন তথ্য জানিয়েছে সূত্র।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে একসঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ও মান্না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা একটা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছি। উদ্দেশ্য একটাই এটাকে একটা যৌক্তিক পরিণতির দিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের আজকে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কার্য্করী আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এই আলোচনার রেশ ধরে বাকি দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। আমরা অন্যান্য দলের সঙ্গে কথা বলবো। তাদের সঙ্গে অতি দ্রুত আলাপ-আলোচনা শেষ করে  আশা করছি যে, আমরা যৌথভাবে একটা  আন্দোলনের সূচনা করতে পারবো। আমরা আশা করি, খুব শিগগিরইএই কাজটা করতে পারবো।’

বৈঠকে বিএনপি ও নাগরিক ঐক্যের নেতারা মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশের মানুষ আশা করে আছে যে, বিরোধী দলগুলো একটা ঐক্যের মধ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে সফল কার্যকরি আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন আনবে এবং সেই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা সরকার ও পার্লামেন্ট হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা আজকে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে কথা বলেছি।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই বৈঠক আনুষ্ঠানিক হলেও অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে আমাদেরসঙ্গে বিএনপির কথা হয়েছে। আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যেসব কাজ করা দরকার, সবগুলো না হলেও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আজকের সভায় আমরা আলোচনা করেছি। এই মৌলিক বিষয়গুলোর একটা হচ্ছে— এই সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু, ভালো, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। এটা এদেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল বলেছে। এরই ভিত্তিতে এই সরকার চলে যাওয়ার পরে পরবর্তি নির্বাচন ও সরকার প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাকে যে নামেই ডাকি আমরা, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। এই দাবির ভিত্তিতে আমরা লড়াই করবো। এই চিন্তায় কাজ করছিলাম। আজকের বৈঠকের প্রথমে আমরা সেই কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।’

‘এই আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া যায় কীভাবে,  আমাদের দলগুলোর পারস্পারিক বোঝাপরা-সমঝোতা, নিজেদের দলগুলোর কোনও সমস্যা, কোনও রাজনৈতিক সংকট— এগুলো নিয়ে আমরা কথাবার্তা বলেছি। একটা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার পদক্ষেপ হিসেবে আজকের এই বৈঠককে আমরা বিবেচনা করছি। আমি মনে করি, বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা মুখ্য হবে’, বলেন মান্না।

কী আলোচনা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি, তার প্রধান বিষয় হচ্ছে— গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। আমরা আলোচনা করেছি— নিরপেক্ষ সরকার গঠনের পর নির্বাচন কমিশন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলকে নিয়ে মতামতের ভিত্তিতে একটা সরকার গঠন করা। এগুলো আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল।’

ফখরুল বলেন, ‘আরেকটি বিষয় ছিল, যেটা হচ্ছে— আমাদের খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে, তার মুক্তি যেটা মাহমুদুর রহমান মান্না সাহেব বলেছেন। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, গায়েবি মামলা ও যাদেরকে আটক করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‘

নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন— দলটির উপদেষ্টা এস এম আকরাম, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, জিল্লুর চৌধুরী দিপু, জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবু জাহেদ মোহাম্মদ সারওয়ার, আনিসুর রহমান খসরু, মাহবুব মুকুল, মঞ্জুর কাদের, এসএমএ কবির হাসান, আবু তালেব দেওয়ান, মুহিদুজ্জামান মুহিদ, আবদুর রাজ্জাক রাজা প্রমুখ।

/এসটিএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
‘নতুনত্বের’ খোঁজে মির্জা ফখরুল!
স্থায়ী কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিইসরায়েল থেকে বিমান আসা ও কেএনএফ নিয়ে যা বললো বিএনপি
সর্বশেষ খবর
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ