রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল পদ্ধতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে তারা শর্ত দিয়েছে— এই প্রস্তাব কার্যকর হতে হলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ শেষে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী— যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয় ৭০ হাজার জনপ্রতিনিধির ভোটে, তাহলে সেই জনপ্রতিনিধিদের নিরপেক্ষভাবে নির্বাচিত হতে হবে। আমরা অতীতে দেখেছি, সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শাসক দলের প্রতিনিধিরাই নির্বাচিত হন বেশি। তাই আমরা বলেছি, লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন হতে হবে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে, যেখানে মেম্বাররা ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
তিনি আরও বলেন, ভোটারদের পরিসর ইউপি মেম্বার পর্যন্ত হবে, নাকি ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত সীমিত রাখা হবে, তা নিয়েও আলোচনা দরকার আছে। তবে নীতিগতভাবে আমরা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করি, যদি নির্বাচনের ভিত্তি হয় নিরপেক্ষতা।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিষয়ে এই জামায়াত নেতা বলেন, এনসিসি নিয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই নীতিগতভাবে ঐকমত্য পোষণ করেছে। তবে এর কাঠামো ও কার্যপ্রণালী নিয়ে এখনও আলোচনা বাকি।
ঐকমত্য না হওয়া বিষয়গুলো নিয়ে গণভোটের প্রস্তাব দিয়ে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, যে বিষয়গুলোতে একমত হওয়া সম্ভব নয়, সেগুলো নোটসহ জনগণের সামনে তুলে দিয়ে গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। জনগণই চূড়ান্ত রায় দেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, আলোচনার মাধ্যমে একটি সম্মিলিত চার্টার (সনদ) তৈরি হবে, যাতে সব রাজনৈতিক দল সই করবে। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সবাইকে সেই কমিটমেন্ট মেনে চলতে হবে।
বুধবারের আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, সিপিবি, এবি পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
এদিনের সংলাপের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল— জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি), রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া ও পূর্ববর্তী অসমাপ্ত বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি।