ধর্ষকদের ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা করার বেআইনি প্রস্তাবনা সংসদের কার্যবিবরণী থেকে এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘‘ধর্ষকদের ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলতে সংসদ সদস্যদের দাবি সম্বলিত যাবতীয় বক্তব্যকে এক্সপাঞ্জ করার জন্য সংসদের স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই ধরনের বক্তব্য সংসদের মতো সর্বোচ্চ আইনি প্রতিষ্ঠানের কার্যবিবরণীতে থাকার কোনও সুযোগ নেই।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে সাইফুল হক এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘‘কোনও সভ্য, গণতান্ত্রিক ও আধুনিক রাষ্ট্র তার নাগরিককে বিচারের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করতে পারে না। এই ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যার অনুমতি দিলে আইন-আদালত-সংবিধান-পার্লামেন্ট প্রভৃতি আইনি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের আর কোনও প্রাসঙ্গিকতা থাকে না।’
জাতীয় সংসদে ধর্ষণকারীদের ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার প্রস্তাবনা ভয়ঙ্কর বলে আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের প্রস্তাবনা জাতীয় সংসদের জন্য চরম অবমাননাকর। আইন প্রণেতাদের বেআইনি প্রস্তাবনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জনগণের মধ্যে। তারা কী দেশকে জঙ্গলের শাসনে ঠেলে দিতে চায়?’
এই ধরনের দাবি সরকারের কথিত আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং গোটা দেশকে নৈরাজ্যের দিক নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবের সামিল বলে উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, ‘ধর্ষক, খুনিসহ যেকোনও অপরাধেরই প্রচলিত আইনে অপরাধ অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে এসব অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত শেষ করা যেতে পারে।’
সাম্প্রতিক সময়ে মাদক নির্মূলে চার শতাধিক ব্যক্তিকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযাগ করে তিনি বলেন, ‘তাতে মাদক ও মাদকের ব্যবসা বন্ধ হয়নি, মাদক নির্মূল হয়নি।’
সাইফুল হকের দাবি, ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত রাষ্ট্র ও সমাজের গভীর ব্যাধি, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার অকার্যকারিতা। ধর্ষক, খুনিদের প্রশাসনিক-রাজনৈতিক ছত্রছায়া, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ও হতাশা প্রভৃতি নানা কারণে ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এর টোটকা কোনও সমাধান নেই। সামগ্রিক পদক্ষেপের মাধ্যমেই দেশকে এইসব অপরাধ মুক্ত হতে হবে।