চট্টগ্রামে রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে গ্রেফতার হওয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সভাপতি আল কাদেরী জয়, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিরাজ উদ্দিন এবং রিকশা শ্রমিক রোকনের নিশর্ত মুক্তিসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ বাতিলের দাবিতে সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র নেতাদের একটি জোট।
সোমবার (২৬ মে) বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেলের সঞ্চালনায় এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা নজরুল ইসলাম, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন নাসু, রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক দীপায়ন খীসা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভসহ আরও অনেকে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল ক্রমেই তা ফিকে হয়ে আসছে। অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিকদের ওপর চূড়ান্ত দমনমূলক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের গুলি করে সে তার যাত্রা শুরু করে, নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক নেতাদের নামে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এ মামলা দেয় এবং সর্বশেষ চট্টগ্রামে ব্যাটারি চালিত রিকশা অবৈধ ডাম্পিংয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার অপরাধে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রামের শ্রমিক নেতা আল কাদেরী জয়সহ তিনজনকে এই কুখ্যাত নিবর্তনমূলক আইনে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করে।
বক্তরা আরও বলেন, একদিকে সরকার উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে, মবের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকছে কিংবা পিছু হটছে আবার অন্যদিকে জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের ভূমিকা জুলাই আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সরকার নানামুখী সংস্কারের কথা বলছে অথচ রিকশা শ্রমিকেরা যখন তাদের লাইসেন্স, নীতিমালা ও রুট পারমিটের দাবি করছে— সে সময় আমরা দেখি তাদের রাষ্ট্রীয় নির্যাতন নেমে আসছে। বকেয়া মজুরির দাবিতে আন্দোলন করলে পুলিশ লাঠিপেটা করছে। এ থেকেই বোঝা যায় জুলাই আন্দোলনের ফলাফল আসলে শ্রমজীবী মানুষের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। অথচ এই জুলাই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান স্টেকহোল্ডার এদেশের শ্রমজীবী জনগন। যাদের রক্তে এই দুঃশাসনের অবসান ঘটেছে।
বিভিন্ন সময়েই দেশের গণতন্ত্রমনা মানুষেরা এই বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি করে এসেছে মন্তব্য করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকার এমন আইন ব্যবহার করে আন্দোলন দমনে উদ্যত হবে তা আসলে কল্পনাতীত। এই আইন বাতিলেরও দাবি জানান। এই আইনে গ্রেফতার হওয়া নেতাদের নিশর্ত মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।