একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ছাত্র ইউনিয়ন ও ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা যৌথভাবে অংশ নেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন শুভ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে আমরা গুটি কয়েক লোকবল নিয়েই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আর ছাত্র শিবির ছাত্রলীগের সঙ্গে মিশে হলে থেকে গুপ্ত রাজনীতি করেছে। তারাই এখন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চায়। ক্যাম্পাসগুলোতে যে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, সেই জামায়াত শিবিরের রাজনীতিকে আমরা চিরতরে নিষিদ্ধ করতে চাই।
তিনি বলেন, ছাত্র সংঘ পরিচালিত আলবদর বাহিনীর প্রধান আজহারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো, আজকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকেই বিভিন্ন গড ফাদারকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের যে অর্জন সেই অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করছে এই অন্তর্বর্তী সরকার। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, গণহত্যায় অংশ নিয়েছে এবং ২৪-এ যারা গণহত্যায় অংশ নিয়েছে তাদের কেউ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের বিচার হওয়া দরকার।
বাহাউদ্দীন শুভ বলেন, এ দেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছে এই জামায়াত শিবির আর অন্তর্বর্তী সরকার।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, সেই চেতনার সঙ্গে আজকে সাংঘর্ষিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ১৯৭১ সাল পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধকে একটা ব্যবসায় পরিণত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেই চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে তারা কাজ করেছিল। ফলে আজকে জুলাইয়ের মধ্য দিয়ে সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে আমরা পরাজিত করেছি।
তিনি বলেন, একাত্তরের গণহত্যা এবং ২৪-এর গণহত্যা দুটোকে পারস্পরিক করা যাবে না। কিন্তু ২৪-এর গণহত্যার বিচার চাইতে গিয়ে যারা একাত্তরের আলবদর ও রাজাকারদের মুক্তি দিয়ে দিচ্ছেন, সেটা কোনও ভালো লক্ষণ নয়। আমরা সেটা মেনে নিবো না।