জাতির উদ্দেশে গতকাল (৬ জুন) সন্ধ্যায় দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের ওপর এক প্রতিক্রিয়ায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। বাস্তবে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ সম্পর্কে জনদাবি উপেক্ষিত হয়েছে।
শনিবার (৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, ডিসেম্বরে কেন জাতীয় নির্বাচন করা যাবে না— ভাষণে তার যেমন সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই, তেমনি জাতীয় নির্বাচন কেন আগামী বছরের এপ্রিলে নিতে হবে তারও গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য কোনও কারণ উল্লেখ নেই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের যে ধারণা দিয়েছেন নানা দিক থেকেই তা উপযুক্ত সময় নয়। এপ্রিলে প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে রোজার মধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে হবে, যা বাস্তবানুগ নয়। তাছাড়া এপ্রিলেই রয়েছে বড় পাবলিক পরীক্ষা ও আবহাওয়াগত ঝুঁকি। কালবৈশাখীর আশঙ্কা তো রয়েছেই।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে নির্বাচনকে উৎসবের আনন্দে নজিরবিহীন করতে চান, তার জন্য জাতীয় নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বর বা তার আশেপাশেই অনুষ্ঠিত হওয়া উত্তম। এটা কোনও ধরনের জেদ বা রশি টানাটানির বিষয় নয়। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও দাবি বিবেচনায় নিয়ে এরকম একটি উপযুক্ত তারিখ নির্ধারণ করা কঠিন কোনও বিষয় নয়।
সাইফুল হক বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কোনও বিরোধ বা নতুন কোনও সংকট কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি আশা করেন এ-ব্যাপারে সরকার প্রজ্ঞার পরিচয় দেবেন।
বিবৃতিতে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া এবং এ উদ্যোগের বিরোধিতাকারীদেরকে প্রতিহত করার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা অনভিপ্রেত। রাজনৈতিক দল ও জনগণের বিরোধিতার মুখে কেন জাতীয় অর্থনীতির প্রধান লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে তুলে দিতে হবে— তা মোটেও বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, সরকারের উচিত হবে এ ধরনের বিতর্কিত তৎপরতা থেকে সরে আসা।
তিনি জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকারকে ইতিবাচক হিসাবে আখ্যায়িত করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের বাকি দিনগুলোতে তাদের প্রধান তিনটি ম্যান্ডেট - বিচার, সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।